Desh Sangbad
Desh Sangbad
শিরোনাম: ■ ছাত্র হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি ■ পুলিশ গাড়িতে ওপর আন্দোলনকারীদের হামলা ■ নির্মাণাধীন ভবন ধসে ৩ জনের মৃত্যু ■ বঙ্গভবনের সামনে দুই শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ ■ তিনদিনের ব্যবধানে আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম ■ বঙ্গভবনের সামনে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ■ প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দুই উপদেষ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক
প্রতিমাসে ধর্ষণের শিকার ১১১ নারী
Published : Monday, 28 September, 2020 at 8:47 AM, Update: 28.09.2020 12:27:51 PM

প্রতিমাসে ধর্ষণের শিকার  ১১১ নারী

প্রতিমাসে ধর্ষণের শিকার ১১১ নারী

বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বাড়ছে ধর্ষণের পর হত্যা করার মতো নৃশংস ঘটনা। শহুরে ব্যস্ততায় কিংবা গ্রামের নির্জনতায়, কর্মস্থলে, গণপরিবহনে-সর্বত্রই ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত ধর্ষণের ঘটনা। ধর্ষকের লোলুপ দৃষ্টি থেকে বাদ যাচ্ছে না কন্যাশিশু ও বৃদ্ধ নারীরাও। রেহাই পাচ্ছে না প্রতিবন্ধীরাও।

সবশেষ সিলেটে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক তরুণীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সিলেটে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের একটি কক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, ওই কক্ষে থাকা ছাত্রলীগের ৬-৭ জন কর্মী এ ঘটনায় জড়িত।

শুধু এমসি কলেজই নয়, প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে ধর্ষণের ঘটনা। অনেক ক্ষেত্রে গ্রেফতার, সামাজিক ধিক্কার, আইনের প্রয়োগ, এমনকি জেল জরিমানাতেও থামানো যাচ্ছে না ধর্ষকদের। গত সপ্তাহে খাগড়াছড়ি সদরের বলপাইয়া আদাম এলাকায় বাড়িতে ডাকাতি করতে ঢুকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক নারীকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করা হয়।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এক পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৮৯ জন নারী। ধর্ষণের পরে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। সে হিসেবে চলতি বছর গড়ে প্রতিমাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১১ জন নারী।

সংস্থাটির পরিসংখ্যানে আরও দেখা গেছে, ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সহিংসতা দিন দিন বাড়ছে। ২০১৯ সালে ১ হাজার ৪১৩ নারী ধর্ষিত হয়েছেন। যা ২০১৮ সালে ছিল এর প্রায় অর্ধেক ৭৩২ জন। এছাড়া ২০১৭ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮১৮ নারী। এদিকে ২০১৯ সালে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৭৬ জনকে। আর আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন ১০ নারী।

কেন বাড়ছে ধর্ষণ? কেন এ বর্বরোচিত হত্যা-সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিকাংশ ঘটনার বিচার হয় না, অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। মূলত বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বাড়ছে। এর পাশাপাশি মূল্যবোধ, বিচারকার্যে রাজনৈতিক প্রভাব, নৈতিকতা ও সামাজিক অবক্ষয়ও এর জন্য দায়ী। এছাড়া যৌন বিষয়ক শিক্ষা ও পারিবারিক শিক্ষার অভাব, আকাশ-সংস্কৃতির সর্বগ্রাসী বিস্তার এ ধরনের অপরাধের প্রবণতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। রয়েছে প্রযুক্তির অপব্যবহারও।

সংস্থাটির আইনি সহায়তাকারী অ্যাডভোকেট মাকসুদা আক্তার লাইলী জানান, ধর্ষণের ক্ষেত্রে তো বিচার হয় না। আর বিচার না হলে এমন ঘটনা তো বাড়বেই।

তিনি জানান, আইনে আছে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার হতে হবে। কিন্তু বাস্তবে বিচার হতে ৮ থেকে ১০ বছর লেগে যায়। বিচারের এ দীর্ঘসূত্রতা তো রয়েছেই, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিচারকার্যে রাজনৈতিক প্রভাবও। সব মিলিয়ে বিচারহীনতার কারণে বেড়েই চলছে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, ‘যারা ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটাতে পারে, তাদের বিবেকবোধ, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা মোটেও নেই। আমরা তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষতায় যেমন সুফল পাচ্ছি, পাশাপাশি পাচ্ছি কিছু কুফলও। এখন অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েরা মোবাইলে এক ক্লিকেই যেকোনো অশ্লীল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারে, যা তাদের মস্তিষ্কে ছাপ ফেলছে, ভোগবাদী সত্তাকে জাগিয়ে তুলছে এবং তাদের নৈতিক সত্তাকে অবদমন করছে। এ কারণেই মূল্যবোধ ও নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের প্রধান ড. সানজিদা আখতার বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নারী নির্যাতন কিংবা ধর্ষণের ঘটনার পেছনে বহুমুখী কারণ রয়েছে। গোটা সমাজ ব্যবস্থা হতাশাগ্রস্ত। সামাজিক মোরালিটিতেও ধস নেমেছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য, নৈতিক অবক্ষয় বেড়েছে। নারীর পদচারণা বাড়লেও তাদের অগ্রগতি কিংবা নারীর প্রতি যে দৃষ্টিভঙ্গি হওয়া উচিত সেভাবে আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে গড়ে তোলা যায়নি। নারীকে ঘরে কিংবা বাইরে মানুষ হিসেবে দেখার মতো মানসিকতা আমাদের তৈরি হয়নি। সেই জায়গাটায় পরিবারের জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।’

যৌন বিষয়ক শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, ‘আকাশ-সংস্কৃতির কারণে সমাজে যেসব বিষয় আসছে, সেগুলো ধারণের মতো মানসিক সক্ষমতা আমাদের নেই। এ কারণে ধর্ষণই শুধু নয়, অন্যান্য অপরাধও বাড়ছে। আমাদের মনস্তত্ত্বে যে নেতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এর উত্তরণ প্রয়োজন। সচেতনতামূলক কার্যক্রম নিতে হবে। যৌন বিষয়ক শিক্ষা নিয়েও আমাদের দেশে তেমন কোনো কার্যক্রম নেই। অথচ এগুলো আধুনিক সমাজের পথচলায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ধীরে ধীরে ধাপের পর ধাপ পেরিয়ে সে অবস্থায় আমাদের পৌঁছাতে হবে।’

পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি- মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলার তদন্তে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। গত বছর নির্ধারিত সময়ে এ সংক্রান্ত ৮৫ শতাংশ মামলার চার্জশিট দিয়েছি। দু-একটি ঘটনায় বিচ্যুতি থাকতে পারে। তবে সেটা জানা মাত্র কিংবা অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটামাত্র জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’- এ জানানো মাত্র দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।

দেশসংবাদ/বার্তা/এসআই


আপনার মতামত দিন
বিমানের প্রথম নারী পরিচালক তাসমিন
নিজস্ব প্রতিবেদক
Monday, 14 October, 2024
আজ জাতীয় কন্যাশিশু দিবস
নিজস্ব প্রতিবেদক
Monday, 30 September, 2024
বাচ্চাদের ‘গুড টাচ-ব্যাড টাচ’ জানা জরুরি
লাইফস্টাইল ডেস্ক
Thursday, 5 September, 2024
বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ৫৬ লাখ মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
Saturday, 31 August, 2024
শিশুরা পাবে ভিটামিন এ ক্যাপসুল
দেশসংবাদ ডেস্ক
Monday, 11 December, 2023
প্রতিমাসে ধর্ষণের শিকার ১১১ নারী
দেশসংবাদ, ঢাকা
Monday, 28 September, 2020
আরো খবর
সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর >>
https://deshsangbad.com/ad/1699508455_1491666999_th.jpg
সর্বাধিক পঠিত
ফেসবুকে আমরা
সম্পাদক
এফ. হোসাইন
উপদেষ্টা সম্পাদক
ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা
ঠিকানা
৮০২ ভিআইপি রোড, কাকরাইল
ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
Developed & Maintenance by i2soft
যোগাযোগ
ফোন: +৮৮ ০২ ৪৮৩১১১০১-২
মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৩ ৬০১৭২৯
ইমেইল: [email protected]
up