শিরোনাম: |
দুই সপ্তাহ ধরে বেঁচে থাকার সব আয়োজনকে ব্যর্থ করে মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন গৃহবধূ তাসমীম আক্তার মীম। মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা (আইসিইউ) কেন্দ্রে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মীমের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন তার বাবা মিরপুর উপজেলার কামিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. মহিবুল আলম।
একমাত্র মেয়ে তাসমীম আক্তার মীম ৪ বছর আগে কলেজে পড়ার সময় নিজের পছন্দেই বিয়ে করেছিলো দৌলতপুর উপজেলার তাড়াগুনিয়া গ্রামের মৃত জিন্না মোল্লার ছেলে এজাজ আহমেদ বাপ্পীকে। গত ০১ সেপ্টেম্বর শ্বশুরবাড়িতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয় মীম। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। ০২ সেপ্টেম্বর সকালে ভর্তির পর থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন বলে জানালেন মহিবুল আলম।
মহিবুলের অভিযোগ, ‘ঘটনার পরই দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে গেলে উল্টো পুলিশ বলে আপনার মেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে, এসবের কোনো মামলা হয় না, এখানে পুলিশের কিছু করার নেই’।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নিজেরাই পছন্দ করে বিয়ে করার ফলে বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি কোহিনুর বেগম মীমের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে শুরু করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে স্বামী এজাজ আহমেদ বাপ্পী এবং শাশুড়ি কোহিনুর বেগম মীমের ওপর নির্যাতন শুরু করেন। একপর্যায়ে মীম জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এসময় মা-ছেলে মিলে অচেতন মীমকে ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানোর চেষ্টাকালে আকস্মিকভাবে মীম জ্ঞান ফিরে পায় এবং পরিস্থিতি বুঝতে পেরে বাঁচার আকুতিতে সাহায্য চেয়ে চিৎকার করে ওঠে। মীমের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখে। লোক জড়ো হওয়ায় পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বাপ্পী ও মা কোহিনুর বেগম পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা দ্রুত মীমকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
দৌলতপুর থানার ওসি জহুরুল আলম জানান, তাসনীম মীম নামের গৃহবধূ মৃত্যুর ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিলো গত ১ সেপ্টেম্বর। আমি মাত্র দুইদিন হলো এখানে যোগদান করেছি। ওই সময় তার বাবার দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। পুলিশ অভিযোগ পেয়েও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এমন অভিযোগের সত্যতা পেলে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহত মীমের বাবাকে এজাহার দিতে বলেছি, দাফন সম্পন্ন করে এজাহার নিয়ে আসার কথা। এজাহার পেলে মামলা রুজুসহ ন্যায় বিচারের জন্য আইনগত যা কিছু করার আছে সবই করবে পুলিশ।
দেশসংবাদ/প্রতিনিধি/এফএইচ/mmh
আপনার মতামত দিন
|