শিরোনাম: |
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ছাতার পাড়ায় বাবা-ছেলেসহ তিনজকে কুপিয়ে জখম ও মারধরের ঘটনায় দৌলতপুর থানা পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে একটি অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভূগিরা। একাধিকবার দৌলতপুর থানায় গেলেও কোন অভিযোগ গ্রহণ করেনি পুলিশ এমনটি অভিযোগ ভুক্তভুগিদের।
আদালতে দেওয়া অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, আজ সকাল ৮টার সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ছাতারপাড়া এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উক্ত এলাকার রবজেল প্রামানিকের ছেলে রফিকুল ইসলামের বাড়ীতে দলবদ্ধ হয়ে হামলা চালায়। এসময় রফিকুল বাধা দিতে গেলে প্রতিপক্ষ নজরুল তাকে ফালা দিয়ে আঘাত করে গুরুত্বর জখম করে। এসময় রফিকুলের পিতা রবজেল প্রামানিক ও চাচা মস্তোক প্রামানিক তাদের উদ্ধার করতে গেলে তাকেও আহত করে প্রতিপক্ষরা। এসময় রফিকুলের বাড়ীসহ তার চাচা আবজাল প্রামানিকের বাড়ীতে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায় নজরুলের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষরা।
ঘটনার সময় তাদের বাড়ীতে থাকা বৈদ্যুতিক মোটর, দুইটি ছাগল, ঘরে থাকা ধান, চাউল, গমসহ বেশ কিছু মালামাল নিয়ে যায়। এসময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে নজরুল ও নওয়াবের নেতৃত্বে আকবর, হামিদ, আসমত বেশ কয়েকটি ককটেল বোমা বিস্ফোরণ করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা রফিকুল ইসলাম, তার পিতা রবজেল প্রামানিক ও চাচা মস্তোক প্রামানিককে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে সেখানে তাদের শারিরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের চিকিৎসকরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় একাধিকবার তারা দৌলতপুর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ তাদের।
পরে গত ১৩ আগস্ট কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে প্রতিবন্ধী আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছেন। এসময় তিনি ১৮জন আসামীর নাম উল্লেখসহ আরো ১০/১৫জন অজ্ঞাত বলে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগটি বাংলাদেশ দন্ডবিধি ৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৫০৬/৩৮০/৩৪ ধারা এবং বিস্ফোরক আইনের ৩/৪ ধারায় অভিযোগটি গ্রহণের জন্য আবেদন করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ছাতারপাড়া এলাকার মৃত মকবুল গাইনের ছেলে নওয়াব আলী, মৃত রমজান আলীর ছেলে আব্দুল হামিদ, নজরুল ইসলাম, ছাত্তার গাইনের ছেলে আকবার গাইন, আজগর গাইন, ইসমাইল হোসেন, ইউনুস আলীর ছেলে মোতালেপ হোসেন, মৃত কোমর গাইনের ছেলে আসমত আলী, চান্দু গাইনের ছেলে আরিফ গাইন, সাইফুল গাইন, আলমগীর গাইন, শফি গাইনের ছেলে আব্দুস সালাম, আজিজ গাইনের ছেলে বেলাল হোসেন, নজরুল ইসলামের ছেলে তারিক আলী, শরীফ গাইনের ছেলে সাকিব গাইন, আবেদ গাইনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম, ইসমাইল গাইনের ছেলে ফয়সাল গাইন ও আকবর গাইনের ছেলে জাফর গাইন।
আদালতে অভিযোগকারী শারিরিক প্রতিবন্ধী আব্দুর রশিদ জানান, এ ঘটনার পর থেকে আমি একাধিকবার দৌলতপুর থানায় অভিযোগ দিতে যায়। কিন্তু দৌলতপুর থানা পুলিশ আমার অভিযোগ গ্রহণ করেনি। ঘটনার আসামীদের সাথে পুলিশের একটা গভীর সম্পর্ক থাকায় তারা অভিযোগ গ্রহণ করেনি। এর পরে আমি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবী করি।
ঘটনায় গুরুত্বর আহত রফিকুল ইসলাম জানান, সকালে আমি বাড়ীতেই ছিলাম। হঠাত নওয়াব আলী ও নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও ঢাল-ফালা, কুড়াল, রামদা নিয়ে আমার বাড়ীতে হামলা চালায়। এসময় নজরুল ইসলাম তার হাতের ফালা দিয়ে আমাকে মেরে ফেলার উদ্যোশ্যে ফালা দিয়ে আঘাত করে। আমি পালাতে গেলে ফালা এসে আমার ডান পায়ের দাবনায় লেগে এপিট-ওপিট হয়ে বের হয়ে যায়। এসময় অনান্যরা আমাকে বাশ-রড দিয়ে পিটাতে থাকে। এসময় আমার বাবা ও চাচা আমাকে উদ্ধার করেতে গেলে তাদেরও মারধর করে, কুপিয়ে জখম করে। পরে আমার বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুস সালাম জানান, ঘটনার সময় হঠাৎ করেই নওয়াব আলী ও নজরুলের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন লোকজন এসে রফিকুলের বাড়ীতে হামলা চালায়। রফিকুলকে মারধর করে। এসময় তার বাবা ও চাচা ঠেকাতে গেলে তাদেরও মারধর করে। এসময় আমরা প্রতিবেশীরা ঠেকাতে গেলে বেশ কয়েকটা ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর পরে তারা পালিয়ে যায়। পরে আমরা তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
দেশসংবাদ/প্রতিনিধি/এফএইচ/mmh
আপনার মতামত দিন
|