শিরোনাম: |
ভোলায় মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে অতিরিক্ত জোয়ারের পানির চাপে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধসহ কাঁচা ঘরবাড়ী, পুকুরের মাছ, রাস্তাঘাট ও আশ্রয়ন ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের মাটিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এতে প্লাবিত হয়েছে ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখান, তজুমদ্দিন, মনপুরা ও চরফ্যাশন উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ।
গত তিন দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে দূর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন এসব বানভাসি ও নিম্নাঞ্চলের মানুষ। পানিতে ঘর, ফসলি জমি, মাছের ঘের ও আসবাপপত্র হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু স্থানে। চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শুক্রবার (২১ আগস্ট) মেঘনার পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) ছিল ১১৪ সেন্টিমিটার। এতে আরেক দফায় তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, গত কয়েকদিন থেকেই ঝুঁকির মুখে ছিল ভোলার ইলিশা ইউনিয়নের মুরাদসফিউল্লা গ্রামের সাজিকান্দি পয়েন্টের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। মেঘনার পানি বিপদসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এ পয়েন্ট দিয়ে ভেঙ্গে যায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি। এতে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে তলিয়ে যায় কয়েকটি গ্রামের মানুষের ঘরবাড়ি।
বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে ইলিশা ইউনিয়নের তিনটি গ্রামসহ জেলার উপকূলবর্তী ৫০টি গ্রামের মানুষ। জোয়ারের পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় গত তিন দিন ধরে অনেকের ঘরে রান্নার চুলা জ্বলছে না। অনেকেই তিনবেলা ঠিকমতো খেতে পাচ্ছেন না। দূর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু স্থানে। দ্রুত বাঁধ মেরামতের দাবি বানভাসি এসব মানুষের।
পানিবন্দি এলাকার আসমা বেগম বলেন, পানির মধ্যে দিন কাটাচ্ছি, কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না। একই কথা জানালেন আঞ্জরা ও কামাল হোসেন।
গৃহবধূ ফয়জুন বিবি বলেন, পরিবারের ১১ জন নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। পানিতে ঘর তলিয়ে যাওয়ায় রান্না হয়নি। ঘরের অনেক জিনিসপত্র ভেসে গেছে।
পূর্ব ইলিশা যুব ফাইন্ডেশনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন জানান, জোয়ারের পানিতে এখানকার ১২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের অনেকে এখন দূর্ভোগের মধ্যে আছেন। কেউ কেউ আবার খোলা আকাশের নিচে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ ও উজানের পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় এমন জোয়ার হচ্ছে বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান।
তিনি বলেন, জোয়ারের পানির চাপে চার উপজেলার ৪/৫ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ার নেমে গেলে ভাঙ্গা বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে। বাঁধ সংস্কার করা হলে তখন আর মানুষের দূর্ভোগ থাকবে না। এদিকে টেকসই বাঁধ মেরামতের মধ্য দিয়ে বানভাসি মানুষদের দূর্ভোগ লাগবের দাবি এলাকাবাসীর।
দেশসংবাদ/প্রতিনিধি/এফএইচ/mmh
আপনার মতামত দিন
|