শিরোনাম: |
যুক্তরাষ্ট্রের ডাক সেবা অচল করে নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত করছেন ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনটাই অভিযোগ করেছেন বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাদের।
আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে হঠাৎ করে ডাক সেবায় মন্থরগতিতে সেই আশঙ্কা আরও জোরদার হয়েছে। এছাড়া ডাক বিভাগকে লক্ষ্য করে নজিরবিহীন আক্রমণ শুরু করেছেন ট্রাম্প।
নির্বাচনের আগেই গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগটির ব্যয়সংকোচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে ডাকযোগে ভোটের দাবি তুলেছেন বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা।
কিন্তু ট্রাম্পের দাবি, ডাকযোগে ব্যালটে জালিয়াতি হাতে পারে। বিরোধীদের পাল্টা অভিযোগ, ব্যয়সংকোচ করে ট্রাম্পই নির্বাচন বানচালের মতলব করছেন। এবার সংসদেও সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই চক্রান্ত প্রতিহত করতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে ডেমোক্র্যাটরা। এমন অবস্থায় কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে জরুরি অধিবেশনের আহ্বান করেছেন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।
ডাক বিভাগে আনা পরিবর্তনগুলো আটকে দিতে ভোটাভুটিরও আয়োজন করা হচ্ছে। এমনকি সরকারের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তত ছয় রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা। খবর নিউইয়র্ক টাইমস, এএফপি ও রয়টার্সের।
দ্রুতগতির সেবার জন্য বিশ্ববিখ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের পোস্টাল সার্ভিস বা ডাক বিভাগ (ইউএসপিএস)। ঝড়-তুফান, তুষারপাত আর দাবদাহের মধ্যেও মেইল বা চিঠি পৌঁছে দিয়ে থাকে ডাক বিভাগের কর্মকর্তারা। কিন্তু ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদে শেষ পর্যায়ে এসে একেবারেই নতুন সংকটের মুখে পড়েছে এই বিভাগ। নতুন এই সংকট আর কিছু নয়, ডাকসেবায় ধীরগতি, যা এই বিভাগকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
এর মধ্যে রাজ্যে রাজ্যে নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ডাক বিভাগ জানিয়েছে, ধীরগতির কারণে ভোটারদের ব্যালটগুলো গণনার জন্য পাঠাতে দেরি হতে পারে। এর ফলে ডাকযোগে ভোট দেয়া ও ব্যালট আদৌ গণনা হবে কিনা তা নিয়ে বেশ দ্বিধার মধ্যে পড়েছে মার্কিন ভোটাররা।
করোনা সংকটের মধ্যে ভোটগ্রহণ সম্ভব করতে বিভিন্ন রাজ্যে সব ভোটারকে ডাকযোগে ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ডেমোক্রেটিক গভর্নররা এমন ‘মেল-ইন’ ব্যালটের উদ্যোগ নিচ্ছেন। ফলে দেশের প্রায় অর্ধেক ভোটার ডাকযোগে ভোট দিতে পারেন।
কিন্তু ট্রাম্প এমনই এক সংকটের সময়ে ডাক বিভাগের ব্যয়সংকোচের যে বিতর্কিত পদক্ষেপ নিয়েছেন, তার ফলে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল জানতে দীর্ঘ বিলম্ব ঘটতে পারে।
এমন প্রেক্ষাপটে ডাক বিভাগের অবকাঠামো ও কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে মার্কিন পোস্ট মাস্টার জেনারেল লুইস ডিজয় ও অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাকে কংগ্রেসে তলব করেছেন ডেমোক্র্যাটিক দলের নেতারা। এছাড়া রোববার এক ঘোষণায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা শিগগিরই প্রতিনিধি পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেছেন পেলোসি।
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের ফলে দেশজুড়ে চিঠিপত্র বিলির গতি ইতোমধ্যেই যেভাবে কমে গেছে, তার ফলে পোস্টাল ব্যালটকে ঘিরে ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ছেন বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিরা। ডাক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জেরা করে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে চান তারা।
প্রয়োজনে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়ে ডাক বিভাগের কাজে বিঘ্ন দূর করার কথাও ভাবছেন নেতারা। আইনি পথে ডাক বিভাগে কোন রকম পরিবর্তন রোখার চেষ্টা করতে পারেন। বেশ কয়েকটি রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এমন আভাস দিয়েছেন।
দেশসংবাদ/জেআর/এফএইচ/mmh
আপনার মতামত দিন
|