প্রখ্যাত কবি, গীতিকার এবং সুরকার রজনীকান্ত সেনের জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি ১৮৬৫ সালের ২৬ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে রজনী খুবই দুষ্টপ্রকৃতির অধিকারী ও সদা-সর্বদাই খেলাধূলায় ব্যস্ত থাকতেন। কিন্তু তার নৈতিক চরিত্র সকলের আদর্শস্থানীয় ছিল। তিনি পড়াশোনায় সময় ব্যয় করার সুযোগ পেতেন। তারপরও পরীক্ষায় আশাতীত ফলাফল অর্জন করতে পারতেন।
পরবর্তীকালে এ বিষয়ে তিনি তার দিনপঞ্জী বা ডায়রীতে উল্লেখ করেছেন। বিদ্যালয় অবকাশকালীন সময়ে প্রতিবেশীর গৃহে সময় ব্যয় করতেন। সেখানে রাজনাথ তারকরত্ন মহাশয়ের কাছ থেকে সংস্কৃত ভাষা শিখতেন। এছাড়াও, গোপাল চন্দ্র লাহিড়ীকে তিনি তার শিক্ষাগুরু হিসেবে পেয়েছিলেন। ১৫ বছর বয়সে কালীসঙ্গীত রচনার মাধ্যমে তার অপূর্ব কবিত্বশক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
আইন পেশার পাশাপাশি তিনি সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষতঃ সঙ্গীত, সাহিত্য, নাটকে অভিনয় ইত্যাদিতে গভীরভাবে মনোঃসংযোগ ঘটান। এরই প্রেক্ষাপটে রাজশাহীতে অবস্থানকালে তার বন্ধু ও বিখ্যাত ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয় এবং স্ত্রীর কাছ থেকে বেশ সক্রিয় সমর্থন পান। রজনীকান্ত ওকালতি পেশায় গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট ও সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
এ সময় থেকে মৃত্যুর প্রায় এক বৎসর পূর্ব পর্যন্ত রজনীকান্তের জীবন এক অখণ্ড আনন্দের খনি ছিল। তার সঙ্গীত-প্রতিভাই তাকে অমর করে রেখেছে। সঙ্গীত-রচনা করা তার পক্ষে এমনই সহজ ও স্বাভাবিক ছিল যে, তিনি অবহেলায় উপেক্ষায় অতি উৎকৃষ্ট সঙ্গীত রচনা করতে পারতেন। তিনি বাঙালি শিক্ষা-সংস্কৃতিতে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সমসাময়িক এই গীতিকারের গানগুলো খুবই জনপ্রিয়। ঈশ্বরের আরাধনায় ভক্তিমূলক ও দেশের প্রতি গভীর মমত্ববোধ বা স্বদেশ প্রেমই তার গানের প্রধান বৈশিষ্ট্য ও উপজীব্য বিষয়। রজনীকান্তের শেষ দিনগুলো ছিল অসম্ভব ব্যথায় পরিপূর্ণ। ১৯১০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি লোকান্তরিত হন।