Published : Tuesday, 14 January, 2025 at 11:59 PM, Update: 15.01.2025 1:25:13 AM
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গঠনতন্ত্র সংশোধনী প্রস্তাবনা প্রত্যাহার না করলে কোনো ধরণের লিগে অংশগ্রহণ করবে না ঢাকার ক্লাবগুলো। সঙ্গে বিসিবিকেও তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে ঢাকা ভিত্তিক ক্লাবগুলোর সংগঠকরা। সংশোধনীতে ঢাকার ক্লাবগুলোর কর্তৃত্ব কমিয়ে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি, ২০২৫) রাজধানীর একটি হোটেলে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের (সিসিডিএম) আওতাধীন ক্লাবগুলোর সংগঠকরা মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত নেন। দুপুর ৩টা থেকে শুরু হয় মতবিনিময় সভাটি। এখানে বিভিন্ন ক্লাবের প্রতিনিধিরা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
সভায় লিজেন্ডেস অব রূপগঞ্জের জয়েন্ট সেক্রেটারি আহমেদ এসএম রুবেল বলেন, ‘‘শুক্রবারের মধ্যে প্রস্তাবনা খসড়া পুনঃরায় তৈরি করতে হবে। শনিবার আমরা বিসিবিতে যাব। আর এটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কোনো লিগে অংশগ্রহণ করবে না ক্লাবগুলো। সংশোধনী কমিটির আহ্বায়ক ফাহিমকে পদত্যাগ করতে হবে।’’
বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে আছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রতিনিধি মো. সাইফুল ইসলাম। বাকি তিন সদস্য হচ্ছেন— আইনের তথা বিসিবির লিগ্যাল অ্যাডভাইজর মো. কামরুজ্জামান, ব্যারিস্টার শেখ মাহদি এবং এ কে এম আজাদ হোসেন।
বিসিবির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ক্রীড়া সংগঠক রফিকুল ইসলাম বাবু মতবিনিময় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যে জিনিসগুলো করা হয়েছে গঠনতন্ত্রে, আমাদের ক্লাবগুলোকে অপমান করা হয়েছে। ঢাকা লিগের ক্লাবগুলো যে অবদান রেখেছে ক্রিকেটের উন্নয়নে, খেলোয়াড় সৃষ্টিতে, স্বাধীনতা থেকে এই পর্যন্ত, তাদেরকে প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রে অপমানিত করা হয়েছে। ১২ জন বোর্ড ডিরেক্টর থেকে চার জনে নিয়ে আসা হয়েছে, ৭৬ জন কাউন্সিলর থেকে ৩০ জনে নিয়ে আসা হয়েছে। এটা মানার যোগ্য না।”
“আগামী তিন দিনে মধ্যে যদি একটা সিদ্ধান্ত না দেয় তাহলে সমস্ত ক্লাবগুলো খেলা থেকে বিরত থাকবে। যতদিন পর্যন্ত এটা সংশোধন না করা হয়।”
ফাহিমের পদত্যাগ দাবি করে রফিকুল বলেন, “উনি যে কাজটা করেছেন সবাইকে বিতর্কের মুখে ফেলে দিয়েছেন, এটা আমাদের সংগঠকরা ক্ষোভের মুখে বলতে পারে, যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে ঢাকার ক্লাবগুলো যদি না চায় তাহলে বোর্ড চালানোর ক্ষমতা কারও নেই।”
উল্লেখ্য, প্রস্তাবনা খসড়ায় দেখা যাচ্ছে নতুন করে সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করলেও বোর্ডে কমানো হচ্ছে ঢাকাভিত্তিক ক্রিকেট ক্লাবের কর্তৃত্ব আর বাড়ানো হচ্ছে ‘সরকারের প্রভাব’। বর্তমানে ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে ১২ জন পরিচালক আসতে পারবেন। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ক্লাব থেকে সেটি কমিয়ে মাত্র ৪ জন পরিচালকে নিয়ে আসা হয়েছে। অর্থাৎ, ঢাকার প্রিমিয়ার ডিভিশন, ফার্স্ট ডিভিশন ও থার্ড ডিভিশন ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে মাত্র ৪ জন পরিচালক আসতে পারবেন বোর্ডে।
ক্লাব ক্রিকেটের সংশ্লিষ্টতা কমলেও বাড়ছে ডিভিশন ও ডিসট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রভাব। আগে ১০ জন পরিচালক আসতে পারতেন বিভাগ ও জেলা থেকে। সেটি তিনজন বাড়িয়ে ১৩ করার প্রস্তাব আনা হচ্ছে। প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রে ঢাকা বিভাগ থেকে একজন বাড়িয়ে তিনজন করা হচ্ছে।
এ ছাড়া, দুজন করে পরিচালক হবেন চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর থেকে। একজন করে থাকবেন বরিশাল ও সিলেট থেকে। রংপুর ও রাজশাহীর পরিচালক সংখ্যা একের পরিবর্তে দুজন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ইন্সটিটিউশন থেকে একজন বাড়িয়ে দুজন করা হচ্ছে। একই থাকছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে। আগের মত বর্তমান সংশোধনীতেও দুজন রাখা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে ২৫ জন পরিচালক থেকে কমিয়ে আনা হচ্ছে ২১-এ। তাতে দেখা যাচ্ছে— বিভাগ, জেলা, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও ইন্সটিটিউশনের ১৭ জন পরিচালকই হবেন সংশ্লিষ্ট সরকারের আস্থাভাজন কেউ। তাতে বোর্ডে বাড়বে ‘সরকারের প্রভাব’ আর কমবে ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট ক্লাবের কর্তৃত্ব।