দেশের মুঠোফোন এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর নতুন করে সম্পূরক কর আরোপ করা সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্ত। সরকারের এই পদক্ষেপ জনগণের ইন্টারনেট সেবার ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর পরিবর্তে তাদের সেবার বাইরে রাখার সামিল। আগামী সপ্তাহের মধ্যে যদি এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে এনবিআর কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবায় কর বৃদ্ধির হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের’ দাবিতে মানববন্ধনে এমন ঘোষণা দেয়া হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম ও আইআইজির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, শতভাগ দেশীয় উদ্যোক্তার মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হয়। এই সেবাখাত ধ্বংস করার অপচেষ্টা আগেও করা হয়েছে, এখন আবার নতুন করে ১০ শতাংশ এসডি ও সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত করায় গ্রাহকের ভোগান্তি যেমন বাড়বে একইভাবে এই সেবাখাত ধ্বংস হয়ে যাবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে যদি এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয় আমরা গ্রাহক এবং সেবাখাতের সবাইকে নিয়ে এনবিআর কার্যালয় ঘেরাও করবো।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এর সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, এমন উদ্যোগের ফলে ছোট উদ্যোক্তারা যেমন হুমকির মুখে পড়বে ঠিক একইভাবে গ্রাহকদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝার চাপ বাড়বে। ফোনে ইন্টারনেটসেবা বিমুখ হবে জনগণ, যা নতুন করে বৈষম্য তৈরি করবে।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসের বলেন, নতুন করে করের বোঝা জনগণকে শুধু ভোগান্তিতে ফেলবে না, সরকারকে ১০ নম্বর সংকেতে ফেলতে পারে। হঠকারীমূলক সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।
প্রযুক্তিবিদ এবং বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, কারও সঙ্গে আলোচনা না করে এভাবে ইন্টারনেট সেবায় কর আরোপ করা এক ধরনের স্বৈরাচারী আচরণ। নতুন করে কর বৃদ্ধি করলে টেলিযোগাযোগ ইন্টারনেট সেবাখাত হুমকির মুখে পড়বে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরি তো দূরে থাক গ্রাহকরা এই সেবা গ্রহণ করতে পারবে না, ফলে নতুন করে কর আদায় করার যে সিদ্ধান্ত তা হোঁচট খাবে।
সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তাদের খুশি করতেই তাদের পরামর্শে এই ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্ট এর পর আর রাজপথে দাঁড়াতে হবে না। কিন্তু আজ দুঃখের সঙ্গে আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হলো। গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনা না করে কারও সঙ্গে আলোচনা না করে রাতের আঁধারে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে আমরা এনবিআর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করাসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, প্রযুক্তিবিদ ফিদা হক, ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিনিধি আনিস, পাঠাও এর সিইও ফাহিম আহমেদসহ খাত সংশ্লিষ্ট অন্যরা।