উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়েও ওষুধ, এলপি গ্যাস, মোবাইলে ফোনের সিম ব্যবহারের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবাসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক, কর, ভ্যাট বাড়ল।
বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) এ বিষয়ে দুটি অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
অধ্যাদেশ জারির পর রাতেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। এতে করে শুল্ক ও কর বাড়ানোর বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হয়ে গেছে।
চলতি অর্থবছরের মাঝপথে এসে আইএমএফের চাপে এসব পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর-ভ্যাট, সম্পূরক ও আবগারি শুল্ক বাড়ানোর ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিস্কুট, ওষুধ, পোশাক কেনাকাটা, মিষ্টি, বেশ কয়েক ধররেনর টিস্যু, মোটর গাড়ির গ্যারেজ, এলপি গ্যাসের মত পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। সিগারেটে আরেক দফা দাম ও কর বাড়ানো হয়েছে।
মোবাইল ফোনের সিম কার্ডের উপর সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করা হয়েছে। ইন্টারনেট সেবা বা আইএসপির উপর প্রথমবারের মত ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বসানো হয়েছে।
তবে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও এনবিআর দাবি করেছে, এতে ভোক্তার বাড়তি মূল্য গুনতে হবে না।
ভ্যাট ও শুল্ক-কর বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা দাবি করেছিলেন, এ পদক্ষেপে নিত্যপণ্যের বাজারে ‘প্রভাব পড়বে না’।
কর আদায়কারী সংস্থা এনবিআরও একই সুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও পাঠিয়ে দাবি করেছিলেন, মূল্যস্ফীতিতে ’প্রভাব পড়বে না’।
তবে পণ্য ও সেবার তালিকা বিশ্লেষণ করে চাল, ডাল, আটা, তেলের মত পণ্য না থাকলেও যেসব পণ্য ও সেবার শুল্ক-কর বাড়ানো হয়েছে এগুলোর বেশির ভাগ বর্তমান সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় হওয়ায় তা খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি উস্কে দেবে বলে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য।
বৃহস্পতিবার রাতে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং দ্য এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ নামে এ দুটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক বাড়াতে এনবিআরের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এরপর তা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত সাপেক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদ না থাকায় অধ্যাদেশ দিয়ে শুল্ক-কর বাড়াতে হল সরকারকে।
৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তির শর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাড়তি ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে বলেছে। সে কারণে অর্থবছরের মাঝপথে এসে এভাবে হঠাৎ ভ্যাটের বোঝা বাড়ানোর পথে হাঁটে বর্তমান সরকার।