বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চাঁদপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুহাম্মদ ফারহান সাদিক এ আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌসুলী (এপিপি) শরীফ মাহমুদ সায়েম।
গ্রেপ্তার আকাশ মণ্ডল (২৫) বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ইরফানকে র্যাব-৬ সহযোগিতায় বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১ কুমিল্লার সদস্যরা।
পরে বুধবার দুপুরে তাকে কুমিল্লায় নিয়ে আসে র্যাব। সেখানে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন র্যাব-১১ এর উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন।
পরে র্যাব আকাশ মণ্ডলকে নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাকে কঠোর নিরাপত্তায় আদালতে নিয়ে যায় র্যাব, নৌ পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ।
অ্যাডভোকেট শরীফ মাহমুদ সায়েম বলেন, নৌ পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে আদালতে উপস্থিত করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত শুনানি শেষে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
জাহাজে ৭ খুন সারাদেশের আলোচিত ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা আশা করি তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তার সঙ্গে অন্য কেউ সংশ্লিষ্ট আছে কিনা এবং রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার জন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা বেরিয়ে আসবে।
মামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী হিসেবে শরীফ মাহমুদ সায়েম ছাড়াও আরও ছিলেন মাসুদ প্রধানীয়া, ইয়াসিন আরাফাত ইকরাম ও মো. শাহজাহান খান। তবে আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।
এর আগে সোমবার বিকালে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় মেঘনা নদীতে এমভি ‘আল বাখেরাহ’ জাহাজ থেকে পাঁচটি লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ সময় গুরুতর আহত আরও তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ১০ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়েছে। জাহাজের মালিকের পক্ষে মাহাবুব মুর্শেদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে হাইমচর থানায় মামলাটি করেন বলে চাঁদপুর নৌ-পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানান।
একইদিন চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত সাতজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে জেলা প্রশাসন।
নিহতরা হলেন- জাহাজের মাস্টার ফরিদপুর জোয়াইর উপজেলার মো. গোলাম কিবরিয়া (৬৫), তার ভাগনে জাহাজের লস্কর শেখ সবুজ (৩৫), জাহাজের সুকানি নড়াইলের লোহাগড়ার আমিনুল মুন্সী (৪০), জাহাজের লস্কর মাগুরার মোহাম্মদপুরের মাজেদুল ইসলাম (১৭), একই এলাকার লস্কর সজিবুল ইসলাম (২৬), নড়াইল লোহাগড়া এলাকার জাহাজের ইঞ্জিন চালক মো. সালাউদ্দিন মোল্লা (৪০) এবং মুন্সিগঞ্জ শ্রীনগর থানার জাহাজের বাবুর্চি রানা (২০)।
এছাড়া আহত সুকানি জুয়েল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগে চিকিৎসাধীন।
নিহত প্রত্যেক পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা ও নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।
ঘটনা তদন্তে শিল্প মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি।