নির্বাচন কবে হবে তা এখনই বলতে পারছেন না নির্বাচন সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেছেন, কতোদিন লাগবে নির্বাচন করতে এটা কেউ বলতে পারবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো বসে এ সিদ্ধান্ত নেবে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে কিছুটা সময় দিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ তবে এর জন্য সময় দিতে হবে। আমরা যে প্রস্তাব করবো, সরকার সেগুলো বিবেচনায় নেবে। এরপর দলগুলোর ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি হবে। এটাই যৌক্তিক।
নির্বাচন সংস্কার বিষয়ে কমিশনের প্রতিবেদন আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম বলেন, কমিশনের সুপারিশের আগেই কেন ইসি গঠন হলো সেই জবাব সরকারই দিতে পারবে। সঠিক ব্যক্তিদের নিয়ে ইসি গঠিত হয়েছে, আশা করি তারা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবে। এই ইসির বড় কোনো চ্যালেঞ্জ নেই, যেটা অতীতে ছিল রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে। ভোটার তালিকায় অসঙ্গতি আছে, এগুলো ঠিক করতে হবে।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচন করা। নির্বাচনের প্রক্রিয়া সঠিক হতে হবে, ভোটার তালিকা, প্রার্থিতা যেন অন্যায় ভাবে বাতিল না হয়, ভোটাররা যাতে বিনা বাধায় ভোট দিতে পারে, নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ হয়, ভোট গণনা সঠিক হয়, ভোটের ফলাফল যাতে সঠিক হয় তাহলেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এই দায়িত্ব পালন করবে ইসি।
ভোটার তালিকা তৈরি, নির্বাচন করা, রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন এবং সীমানা নির্ধারণ করা ইসির দায়িত্ব বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বদিউল আলম বলেন, যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করে তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা যাবে না। অথচ গত সরকার এই অপরাধ করেছে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে শাস্তি বা কাউকে বিচারের আওতায় আনা হয়নি। আনা উচিত। নির্বাচনী অপরাধ শুধু প্রশাসনই করেনি, বড় অপরাধ করেছে কমিশন। তাদেরও বিচারের আওতায় আনা উচিত।
রাজনৈতিক দল নির্বাচন প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য হয় অনেক বেশি। অদৃশ্য এই ব্যয় থামানো কিভাবে যায় সেটি বের করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে গণমাধ্যমে ভূমিকা রয়েছে। গত কয়েকটি নির্বাচনে তারা সেই দায়িত্ব পালন করেনি। আমরা নীতিমালা তৈরির চেষ্টা করছি, কিভাবে গণমাধ্যম সেই ভূমিকা রাখতে পারে।
নির্বাচনে নাগরিক সমাজের ভূমিকাও গুরত্বপূর্ণ জানিয়ে বদিউল আলম বলেন, ভোটাররা সিদ্ধান্ত গ্রহনকারী। সবাই এই ভূমিকা পালন না করলে আবারও স্বৈরাচার ফিরতে পারে। স্বৈরাচারী ব্যবস্থা আকাশ থেকে নাজিল হয়নি। পদ্ধতি বা ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হবে। ২০০৭/০৮ সালে সংস্কারের কথা বলা হয়েছিল। মাইনাস টু বাদ দিলেও কিছু সংস্কার করলে প্রধানমন্ত্রীকে পালাতে হতো না।