রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন আন্দোলনরত বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় কলেজে চলমান অনার্স প্রথম বর্ষের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। কয়েক ঘণ্টা পার হলেও পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর আড়াইটা নাগাদ সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ঘেরাওয়ে আসা শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে দুপুর দুইটায় দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। পরে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা পিছু হটলে অপরপক্ষের শিক্ষার্থীরা সোহরাওয়ার্দী কলেজে ঢুকে পড়ে।
এ সময় কলেজটিতে অনার্স প্রথম বর্ষের ইতিহাস পরীক্ষা চলছিল। কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এই কলেজে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। দুপুর ১২টা ৩০-এ শুরু হওয়া পরীক্ষা দুই ঘণ্টা চলার পর নিরাপত্তার স্বার্থে স্থগিত করা হয়। তবে কবি নজরুল কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে এখনো পরীক্ষা চলছে।
কবি নজরুল কলেজের এক ছাত্র বলেন, পরীক্ষা দেড় ঘণ্টা চলার পর আমরা ভাঙচুরের শব্দ পাই। এরপর দুই ঘণ্টা পার হলে দুপুর আড়াইটা নাগাদ শিক্ষকরা পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেন।
এদিকে কলেজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঢুকে পড়ায় পরীক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ সময় কলেজের উপাধ্যক্ষের রুমসহ অধিকাংশ কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়।
কলেজ প্রাঙ্গণে থাকা একটি প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্স, ২টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের কলেজের ট্রফি, চেয়ারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যেতে দেখা যায়। পরে শিক্ষক ও স্টাফদের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রাঙ্গণ ছেড়ে দেন। এরপর কলেজে থাকা পরীক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে বের হয়ে যান।
এর আগে ডা. মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ(১৮)-এর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতাল ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। এদিন ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হয় প্রায় পনেরোটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ভাইস প্রিন্সিপাল ড. ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ওই কলেজের প্রিন্সিপাল ও আমাদের প্রিন্সিপাল একটা সমঝোতায় আসছিল। আমরা আশ্বস্ত ছিলাম যে এমন কিছু হবে না। কিন্তু তারা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, আজ পরীক্ষা ছিল। গতকাল রাত পর্যন্ত কলেজের প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলল, শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছে, অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা বলল কিছু হবে না। দুপুর সোয়া একটায় কিছু বোঝার আগেই সিসিটিভিতে দেখি প্রচুর ছেলেমেয়ে এসেছে। গেট ভেঙে ঢুকেছে। ইচ্ছামতো ভাঙচুর করেছে। গাড়ি ভাঙচুর করেছে। গ্যাস লাইন ছেড়ে দিয়েছে। এরা কি ছাত্র হতে পারে? এত নাশকতা তো ছাত্ররা করতে পারে না।