Published : Sunday, 27 October, 2024 at 11:59 PM, Update: 28.10.2024 12:24:39 AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ বছর বয়সী ছাত্রলীগ নেতা ফাহমি (ছদ্মনাম) এখন এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। কয়েক সপ্তাহ আগেও তিনি ছিলেন একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য; কিন্তু আজ তিনি আত্মগোপনে।
গত আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের ফলে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। পরে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার পর ফাহমি ও তার মতো হাজারো ছাত্র এখন সহিংসতা, গ্রেফতার ও প্রতিশোধের ভয়ে জীবন যাপন করছেন।
গত বুধবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগকে একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করে। সরকার বলেছে, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সহিংসতা, হয়রানি ও গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে।
ফলিত রসায়নের স্নাতকের শিক্ষার্থী ফাহমি বলেন, কিছুদিন আগে আমি এখানে কর্তৃত্বের কণ্ঠস্বর ছিলাম। এখন আমি ফেরারির মতো ছুটছি, যার সামনে কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
তিনি বলেন, হাসিনা বিরোধী বিক্ষোভের সময় জনগণের বিরুদ্ধে সরকারের প্রাণঘাতী দমন–পীড়নে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেননি। আমার বোনেরা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। আমিও মনে করতাম, দাবি সঠিক। কিন্তু আমি দলীয় বাধ্যবাধকতায় আটকা পড়েছিলাম।
সরকারি চাকরিতে বিতর্কিত কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে গত জুলাইয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, যা পরে হাসিনার ‘স্বৈরাচারী’ শাসনের বিরুদ্ধে গণবিদ্রোহে রূপ নেয়। সরকারের প্রতিক্রিয়া ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তাক্ত অধ্যায়গুলোর মধ্যে একটি। কারণ, নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের মারধর করে।
তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ও গুলি ছোড়ে। তিন সপ্তাহে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন। হাজারো মানুষকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ৫ আগস্ট প্রতিবাদী ছাত্র-জনতা শেখ হাসিনার বাসভবন, সংসদ ভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোয় হামলা চালান। ৭৭ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
হাসিনার পতনের পর ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের শত শত সদস্য ও রাজনীতিবিদরা হামলার শিকার হন। অনেকে আত্মগোপনে চলে যান। কিংবা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে আটক হন।