কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিনের কাছে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর গুলিতে জেলে নিহতের ঘটনায় মিয়ানমারের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ঢাকায় মিয়ানমারের দূতাবাসে পত্র পাঠিয়ে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
এছাড়া সেন্টমার্টিনের কাছে সাগর থেকে ৫৮ জেলে ও ছয়টি ট্রলার অপহরণের ঘটনায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। এ ধরনের অযাচিত ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য মিয়ানমারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের জলসীমার অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং কোনও উসকানিমূলক আচরণ পরিহার করার কথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই বার্তায়।
টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও মিয়ানমারের মধ্যবর্তী বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি করে মিয়ানমারের নৌবাহিনী। এসময় তারা জেলেসহ ছয়টি ট্রলার আটক করে নিয়ে যায়। গুলিতে বাংলাদেশি এক জেলে নিহত এবং দুই জন আহত হন।
জেলেদের পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার প্রশাসনকে ঘটনা জানালে মিয়ানমার নৌবাহিনী বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে একটি ট্রলারসহ জেলেদের হস্তান্তর করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত জেলের মরদেহ ও ১১ জন জেলে নিয়ে একটি ট্রলার শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে ফেরে। পরে রাতে বাকি পাঁচটি নৌযানও ছেড়ে দেয় মিয়ানমার নৌবাহিনী। ট্রলারগুলোয় ৪৭ জন মাঝিমাল্লা ও জেলে ছিলেন। সব মিলিয়ে ৫৮ জন মাঝিমাল্লাসহ ৬টি ট্রলার ফেরত এসেছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জেলে মো. ওসমান গনি শাহপরীর দ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির ট্রলারের জেলে। গুলিবিদ্ধ অন্য দুই জেলেও ওই ট্রলারের।
ট্রলার মালিক সাইফুল জানিয়েছেন, সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ করে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এরপর ছয়টি ট্রলারসহ মাঝিমাল্লাদের ধরে মিয়ানমারে নিয়ে যায়। যেখানে তার মালিকাধীন ট্রলারে গুলিবিদ্ধ তিন জনের মধ্যে একজন মারা যান।
কোস্টগার্ডের শাহপরীর দ্বীপের দায়িত্বরত কর্মকর্তা (নাম প্রকাশ না করে) জানান, মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সঙ্গে আলোচনার পর বৃহস্পতিবার সকালে একটি, বিকালে ৫টি ট্রলার ছেড়ে দেয় তারা।