স্টার কাবাবে কাচ্চি বিরিয়ানির সঙ্গে পচা ও গন্ধ টিক্কা দেয়ায় প্রতিবাদ করায় সাংবাদিককে মারধর করা হয়। ঘটনাটি ঘিরে একটি মামলাও হয়েছে বনানী থানায়। মামলা করলেও সেদিকে না এগিয়ে ক্ষমা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভুক্তভোগী সাংবাদিক সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক।
তবে সেখানে জুড়ে দিয়েছেন একটি শর্ত। সাংবাদিক অলক জানান, যদি স্টার কাবাব অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট এক হাজার এতিমকে খাওয়ায় তাহলে তিনি ক্ষমা করে দেবেন। শর্তটি মেনেও নিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) স্টার কাবাব অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের বনানী শাখার সিইও এসএম মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বনানী থানায় করা মামলার প্রেক্ষিতে একটি প্রতিশ্রুতিনামা দিয়েছেন মনিরুজ্জামান। সেখানে তিনি এসব বিষয় উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি প্রদান করিতেছি যে, গত রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় আমাদের বনানী স্টার কাবাব অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের দ্বিতীয় তলায় সাংবাদিক সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলকের অভিযোগ আমরা যথাযথভাবে সমাধান না করে তার সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে তার জন্য স্টার কাবাব অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ ও স্টার কাবাব পরিবার নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি উক্ত অনাকাঙিক্ষত ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আমাদের সার্ভিস ও খাবারের মান আরও উন্নত করব।
তিনি আরও বলেন, সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলককে আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যয় ও ক্ষতিপূরণ দিতে চাইলেও তিনি তা নিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন এবং ক্ষমার শর্ত স্বরূপ ১০০০ এতিমকে একবেলা বিনামূল্যে খাবার দিতে বলেন। আমরা তার শর্ত মেনে ১০০০ এতিম শিশুকে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এতিমখানায় একবেলা উন্নতমানের খাবর পরিবেশনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
সব ভুলবোঝাবুঝি ভুলে মানুষকে উন্নতমানের খাবার ও সার্ভিস আমরা আগামী দিনে দিয়ে যেতে চাই। আমাদের গ্রাহক, সাংবাদিক সমাজ ও সব শুভানুধ্যায়ীর কাছে আমরা নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থী।
এর আগে রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির বনানী শাখায় সাংবাদিক অলককে মারধর করা হয়।
ওই সময় সাংবাদিক অলক জানান, পচা মাংসের কাবাব দেয়ায় প্রতিবাদ করলে প্রথমে তারা বিষয়টি অস্বীকার করে। পরে তাদের সব স্টাফ মিলে আমাকে মারতে মারতে রক্তাক্ত করে। আমি এর বিচার চাই।
ঘটনা সংশ্লিষ্ট একটি ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে অলককে বলতে শোনা যায়, দুপুরে তিনি ও তার এক বন্ধু খাবারে গন্ধের অভিযোগ করলে স্টার কাবাবের ম্যানেজার বলেন, জীবনে টিক্কা খাননি আপনি। এটা এমনই হয়। এ কথা শুনে অলক প্রতিবাদ করলে সেখানে থাকা আরও তিন গ্রাহকও একই অভিযোগ করেন।
এতে ম্যানেজার কলিংবেল চেপে সব স্টাফকে জড়ো করেন এবং স্টাফরা গ্রাহক অলককে ধাক্কা দিতে দিতে দোতলা থেকে নিচতলায় নামান এবং নিচতলায় সিঁড়ির নিচে ফেলে ব্যাপক মারধর করেন। স্টার কাবাবের মারধরের এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ১৪ থেকে ১৫ জন অংশ নেন।