পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ করছে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। এর মধ্যে ইসলামাবাদে বিক্ষোভের কারণে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান ও দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সন্ত্রাসবাদের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
পুলিশের এফআইআরে ইমরান খান ছাড়াও পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা হাম্মাদ আজহার, সালমান আকরাম রাজা, গুলাম মহিউদ্দিন, এমপিএ শাহবাজ, মুসাররাত জামশেদ চিমা, শেখ ইমতিয়াজ, আলি ইমতিয়াজ, সাব্বির গুজারের নাম রয়েছে।
এফআইআরে বলা হয়েছে, রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী ইমরান খানকে অসাধারণ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এতে তিনি দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন। এফআইআরে দাবি করা হচ্ছে, ইমরান কারাগারে থেকেই দলের নেতা-কর্মীদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সহিংস হতে উসকে দিচ্ছেন।
এর ফলে পিটিআই নেতা-কর্মীরা রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান ও ভাঙচুরের মতো কাজ করছেন। তাদের মারধরে পুলিশ কনস্টেবল বিলাল আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পিটিআইয়ের ১৬ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ছাড়াও ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ইসলামাবাদে বিক্ষোভ করায় পিটিআই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা হয়েছে।
ইসলামাবাদ ছাড়াও লাহোরের মিল্লাত পার্ক ও হানজারওয়াল থানায় পিটিআই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা হয়েছে। এর মধ্যে হানজারওয়ালে পিটিআইয়ের ২০ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পুলিশের এএসআই আকিল। মিল্লাত পার্ক থানায় ১০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সাব ইন্সপেক্টর হাফিজ ইমরান।
এদিকে পিটিআই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ধরপাকড়ের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডিতে পিটিআইয়ের ৩০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ মামলায় ইসলামাবাদে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মীদের নাম যুক্ত করা হয়েছে।
নেসারাবাদ থানায় এ মামলা করা হয়েছে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে। এ ছাড়া অপরাধের ষড়যন্ত্র ও উসকানিমূলক বক্তব্যের অভিযোগও আনা হয়েছে। পুলিশ বলছে, অপরাধে সহায়তা ও প্রচারের জন্য ইমরান খান ও রাওয়ালপিন্ডির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নাম এফআইআরে দেওয়া হয়েছে। এ মামলা তদন্তের জন্য ইনচার্জ ইনভেস্টিগেশন বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মেহবুব রহমানের করা এফআইআরে বলা হয়েছে, পিটিআই চেয়ারম্যান ও স্থানীয় নেতারা সরকার পতনের জন্য পরিকল্পনা করছেন এবং তা সহিংস উপায়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।
ইসলামাবাদে বিক্ষোভের সময় সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে পিটিআই নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ইমরান খানের দুই বোন আলিমা খান ও উজমা খানকে গত শুক্রবার গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত রোববার তাদের আদালতে নিয়ে ২০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত তাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া গতকাল সোমবার আদালত পিটিআইয়ের নয়জন নারী কর্মীকে আদিয়ালা কারাগারে পাঠিয়েছেন।