দেশের প্রতিটি পরিবারকে খাদ্য নিরাপত্তা দেয়ার জন্য স্বপ্নের প্রকল্প ‘ফ্যামিলি কার্ড’ প্রদান করা হবে জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পরিবারের মা অথবা গৃহিণীর নামে এই কার্ড প্রদান করা হবে। রাষ্ট্রের পক্ষে সকল নাগরিক পর্যায়ক্রমে কার্ডটি পাবেন। প্রাথমিকভাবে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিতদের এর আওতায় আনা হবে।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) স্বৈরাচারের পতন ও গণতন্ত্রের পথে যাত্রা এবং শহীদ পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা প্রদান উপলক্ষে কিশোরগঞ্জে বিশাল ‘গণসমাবেশে’ ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিকেল ৩টায় জেলার পুরাতন স্টেডিয়ামে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির আয়োজনে এই গণসমাবেশ শুরু হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফ্যামিলি কার্ড’ সবাই পাবেন বিধায় কোনোপ্রকার দলীয় বা স্থানীয় প্রভাবে কাউকে বঞ্চিত করার সুযোগ থাকবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর একটি অংশ এই কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য ‘ফ্যামিলি কার্ড’ প্রবর্তন হলেও পরবর্তী সময়ে সকলেই এর প্রাপক হবেন। একটি পরিবারের সদস্য সংখ্যা সর্বোচ্চ চারজন বিবেচনায় এই কার্ডটি বিতরণ করা হবে।
স্বৈরাচারের পতন হলেও তাদের প্রেতাত্মারা ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, পতিত স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের ছাড়া আন্দোলনরত সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে আগামীতে দেশ পরিচালনা করতে চাই। স্বৈরাচারের পতন হলেও এখনো তাদের দোসররা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।
তিনি বলেন, আগামীতে সবাইকে নিয়ে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করতে হবে। বাংলাদেশ ছাড়া আমার আর কোনো ঠিকানা নেই।
তিনি আরও বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আজকে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। আমাদের লাখো লাখো নেতাকর্মী নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। শহীদদের রক্তের সাথে কোনো দিন বেঈমানী করা যাবে না। শহীদদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আজকের যে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই সরকারের প্রধান কাজ হবে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়া। কোনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আর যাতে কোনো নব্য স্বৈরাচারের আগমন না ঘটে, সেদিকে সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানান তারেক রহমান।
জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, জেলা বিএনপি সহসভাপতি রেজাউল করিমন খান, জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, জেলা বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাইল মিয়া, কিশোরগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম আশফাক প্রমুখ। জনসভাটি পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
এর আগে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কিশোরগঞ্জের নিহত ১৭ জনের পরিবারকে ও আহত ১৬ জনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। জনসভাকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন।