Published : Friday, 13 September, 2024 at 10:10 AM
লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না কিছুতেই। একটি পণ্যের দাম কমলে অন্যটির বাড়ে কয়েক গুণ। কাঁচাবাজার নিয়ে এমনটাই অভিযোগ ভোক্তাদের। সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়ে গেছে মাছ, মাংস ও শাক-সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়াবাজার,নিউমার্কেট, হাতিরপুল কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, সম্প্রতি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ফসল, মাছ ও মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বাজারে কমে গেছে পণ্যের সরবরাহ। ফলে দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি গোল বেগুন ৯০-১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, করলা ৭০-৮০, ঢ্যাঁড়শ ৫০, বরবটি ৬০, মুলা ৫০, লতি ৬০-৮০, কহি ৬০ টাকা ও পটোল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ টাকা, কচুরমুখী ৬০, টমেটো ১৬০, শিম ২০০ ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।
আর প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়; প্রতি পিস লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। এছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ২০ টাকা, পাটশাক ১৫, পুঁইশাক ৩০, লাউশাক ৪০, মুলাশাক ২০, ডাটাশাক ২০, কলমিশাক ১০-১৫ টাকা ও পালংশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কমায় সবজির দাম বেড়েছে। মূলত বন্যার প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে। নয়াবাজারের সবজি বিক্রেতা উজ্জ্বল বলেন, কেজিতে ৫-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে শাক-সবজির দাম। সম্প্রতি বন্যায় ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। যার প্রভাবে দাম বাড়ছে।
তবে বাজারে কমছে কাঁচা মরিচের দাম। পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়, খুচরা পর্যায়ে যার জন্য গুনতে হচ্ছে ১৬০ টাকা।
এদিকে বাজারে বেড়ে গেছে প্রায় সব ধরনের মাছের দাম। প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৩৮০ টাকায়। এছাড়া চাষের পাঙাশ ২০০-২২০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০-২৮০ টাকায়, চাষের শিং প্রতি কেজি ৫৫০-৬০০ টাকায়, কোরাল ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ টাকা, আইড় ৭৫০-৮০০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
আর ভরা মৌসুম ইলিশের দাম আকাশ ছুঁই ছুঁই। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৩০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৭০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০-১৬০০ টাকা ও ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকা পর্যন্ত।
মাছের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যায় বেশকিছু অঞ্চলে চাষিদের মাছ ভেসে গেছে। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম কিছুটা বাড়তি।
বাজারে চড়া ডিম ও মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। এছাড়া জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়।
অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।
বাজারে মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬০ টাকা, আর সাদা ডিম ১৫০ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।
আর বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।