Published : Saturday, 7 September, 2024 at 3:00 PM, Update: 08.09.2024 12:42:58 AM
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন চাকরি প্রত্যাশীরা।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। এতে শাহবাগ দিয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পরেন এ সড়কে চলাচলকারীরা।
আন্দোলনকারীরা বলেন, বিশ্বের প্রায় ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা কমপক্ষে ৩৫ বছর, তার মধ্যে কিছু দেশে তা উন্মুক্ত। ভারতসহ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো অনেক গবেষণা করেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে ন্যূনতম ৩৫ বছর করেছে। কিন্তু আমাদের মাত্র ৩০ বছর। নতুন বাংলাদেশে আমরা এই বৈষম্য মানি না।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা বয়স না মেধা-মেধা মেধা, আর নয় কালক্ষেপণ-এবার দাও প্রজ্ঞাপন, ৩০ এর শৃঙ্খল-ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, ৩৫ আমার ঠিকানা, বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশে বৈষম্যের ঠাঁই নেই, সাড়া বাংলায় খবর দে, ৩০ এর কবর দে এমন বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনের সমন্বয়ক জসীম নায়েক বলেন, আমরা দীর্ঘ ১২ বছর ধরে এ আন্দোলন করে আসছি। বিগত আওয়ামী সরকার আমাদের দাবি মেনে নেয় নাই। বরং বার বার আমাদের মামলা ও নির্যাতন করেছে। ছাত্র-জনতার সরকারের কাছে আমাদের দাবি, আর কালক্ষেপণ না করে অতিবিলম্বে ৩৫ বাস্তবায়ন করে গ্যাজেট আকারে প্রকাশ করা হোক। আমাদের শিক্ষার্থীর পড়ার টেবিরে ফিরে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেন।
তিনি বলেন, আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন মেনে নিতে হবে। বিকাল ৩টার মধ্যে চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করার দাবি মেনে না নিলে আরও কঠোর আন্দোলন ঘোষণা আসবে। আমরা আজ বিকাল ৩টা পর্যন্ত সরকারকে আল্টিমেটলি দিচ্ছি।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে সারা দেশ থেকে চাকরি প্রত্যাশীরা অংশগ্রহণ করছেন।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কত অনিয়ম চালু আছে সে কথা বলতে গেলে একটা ডিকশনারির মতো হয়ে যাবে। কত যে অস্থায়ী নিয়োগ আছে, যখন-তখন একজনকে কান ধরে বের করে দেওয়া যায়, এমন নিয়মেরও হিসাব নেই। এ সবের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ পর্যন্ত নেই।
তিনি বলেন, আমরা যে আন্দোলন করেছি, এটা শুধু সরকার পতনের আন্দোলন ছিল না। আমরা বলেছি, এটা দেশ বদলের আন্দোলন, অপশাসন বদলের আন্দোলন। দেশ থেকে বৈষম্য দূর করাই আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার সবকিছু সুন্দরভাবে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমি মনে করি, আমাদের দেশটা বদলে যাচ্ছে।
এদিকে চাকরি প্রত্যাশীদের অবরোধের কারণে শাহবাগসহ আশপাশের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনও যানবাহন চলতে দেয়া হচ্ছে না শাহবাগ দিয়ে। বেশিরভাগ যানবাহন ঘুরে অন্য রাস্তা ব্যবহার করছে।
শাহবাগ মোড়ে অবরোধ থাকায় মৎসভবন, কাকরাইল, সায়েন্স ল্যাব ও বাংলামোটরসহ আশপাশের সড়কেও যানজট বাড়তে থাকে।
শাহবাগে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট তৌফিক হাসান বলেন, শাহবাগ মোড় অবরোধ থাকায় আশপাশের মোড়গুলো জানিয়ে দেয়া হয়েছে। শাহবাগমুখী যানবাহনগুলোকে বিকল্প রাস্তায় ড্রাইভার্শন করা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে জনসাধারণের ভোগান্তি কমানো যায়।