কিশোরগঞ্জ শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স একটি ট্যাঙ্ক থেকে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে আটটার দিকে দানের টাকা গোনার কাজ শুরু হয়। প্রতি তিন মাস পর পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়। তবে এবার তিন মাস ২৭ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে।
২৮ বস্তা টাকার সাথে পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়না। গণনায় অংশ নিয়েছেন প্রায় ৩৫০ জনের একটি দল।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এবার তিন মাস ২৭ দিন পর দানবাক্স খুলে এবার রেকর্ড ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। ব্যাংক কর্মকর্তা ও মাদরাসার ছাত্ররা টাকা গণনার কাজ করছেন।
টাকা গণনার কাজে কিশোরগঞ্জের জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এটিএম ফরহাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কাজী মহুয়া মমতাজ, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলামসহ মাদরাসার ২৫৭ জন ছাত্র, ব্যাংকের ৭০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।
স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের অপসারণে অধ্যাদেশ হচ্ছেস্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের অপসারণে অধ্যাদেশ হচ্ছে
জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় পাগলা মসজিদ। সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিন তলা পাগলা মসজিদটি কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা।
মসজিদকে ঘিরে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। এ মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়- এ বিশ্বাস থেকেই পাগলা মসজিদে দেশ বিদেশের নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষ টাকা পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা দান করে থাকেন। অনেকে রাতে গোপনে এসে এ মসজিদে দান করেন বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, পাগলা মসজিদকে ঘিরে দেশ-বিদেশের মানুষের অনুভূতি কাজ করে। তাই সব ধর্মের মানুষ এখানে দান করে থাকেন। দানের এ টাকা দিয়ে শতকোটি টাকার একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নিমার্ণ করা হবে। অন্তত ৩০ হাজার মানুষ যাতে এক সঙ্গে নামাজ পড়তে পারে এমন একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নিমার্ণের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এছাড়া এ থেকে জেলার মসজিদ, মাদ্রাসা ও হতদরিদ্রদের চিকিৎসা খাতে অনুদান দেয়া হয়ে থাকে।
বাংলার বারো ভুঁইয়ার অন্যতম ঈশা খানের আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিলকদর পাগলা নরসুন্দা নদীর তীরে বসে নামাজ আদায় করতেন। তিনি মারা যাওয়ার পর ভক্তরা সেখানে একটি মসজিদ নিমার্ণ করেন। জিলকদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায় বলে জানান স্থানীয়রা।