গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি ১৬ বছরে যে মূল্য দিয়েছে, তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় অভূতপূর্ব বিপ্লবের জন্য ছাত্র সমাজকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, এই বিপ্লবে হাজারখানেক ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। শেষ কয়েক বছরে ২২ জনকে হত্যা করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইতিহাস বড় নির্মম। বুঝিয়ে দিলো ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, ক্ষণস্থায়ী। শেখ হাসিনা অহঙ্কারের সীমা লঙ্ঘন করেছিল। তাই তাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কয়েকশ’ মানুষকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ছাত্র অভ্যুত্থানকে রুখে দিতে কতজনকে হত্যা করেছে তার হিসাব নাই। গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী আইনে এদের বিচার করতে হবে। যারা টাকা লুট করে পাচার করেছে তাদেরও বিচার করতে হবে।
এসময় আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এখনও সময় আছে, আর ঝামেলা করবেন না, টিকতে পারবেন না। মানুষ আর আপনাদের দেখতে চায় না। ভালোয় ভালোয় আত্মসমর্পণ করুন, প্রতাপশালী মন্ত্রীরাও ধরা পড়ছে।
বিএনপি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুছিয়ে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে, জনগণের সরকার গঠন করা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার গণতন্ত্রের পক্ষে থাকবে, ততোক্ষণ এই সরকারের প্রতি আমাদের সমর্থন থাকবে।
আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের কথা বলে দেশে আবারও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ধোয়া তোলার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নেই, সবাই বাংলাদেশি। কিন্তু তাদের ব্যবহার করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির তৈরি করে আওয়ামী লীগ ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে।
খালেদা জিয়াসহ সব নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার ঐক্য সুদৃঢ় করে গণতন্ত্র সুসংহত করা হবে।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন প্রমুখ।