Desh Sangbad
Desh Sangbad
শিরোনাম: ■ ছাত্র হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি ■ পুলিশ গাড়িতে ওপর আন্দোলনকারীদের হামলা ■ নির্মাণাধীন ভবন ধসে ৩ জনের মৃত্যু ■ বঙ্গভবনের সামনে দুই শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ ■ তিনদিনের ব্যবধানে আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম ■ বঙ্গভবনের সামনে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ■ প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দুই উপদেষ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক
কোটা সংস্কার আন্দোলন
‘ওরে আমার বুকের মানিকরে কেড়ে নিলোরে?
Published : Friday, 2 August, 2024 at 3:00 AM

পুলিশের গুলিতে ছেলে নিহত হয়েছে শোনার পর থেকে এভাবেই কেঁদে চলেছেন আবুল বাশার

পুলিশের গুলিতে ছেলে নিহত হয়েছে শোনার পর থেকে এভাবেই কেঁদে চলেছেন আবুল বাশার

‘ওরে আমার বুকের মানিকরে কেড়ে নিলোরে? আমি কী করে বাঁচুমরে? আমার ছেলের কী অপরাধ ছিলোরে? তোরা আমার মানিকরে ফিরিয়ে দেরে, আমার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছেরে।’ছেলের কবরের পাশে বসে এভাবেই বিলাপ করে কাঁদছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত মো. ইউনূছ আলী শাওন (১৭)-এর বাবা আবুল বাশার। 

এলাকাবাসী জানান, পুলিশের গুলিতে ছেলে নিহত হয়েছে শোনার পর থেকে এভাবেই কেঁদে চলেছেন আবুল বাশার। কিছুতেই তার কান্না থামানো যাচ্ছে না। 

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত মো. ইউনূছ আলী শাওন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাগুরী গ্রামের হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। ঢাকার শনিরআখড়া এলাকার একটি কসমেটিকস দোকানের কর্মচারি হিসেবে কাজ করতেন।

গ্রামের সবার একই কথা, শাওনের মত ভালো ছেলে আর হয় না। শাওনের প্রতিবেশী ও সাবেক মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতা হারুনুর রশিদ পাটওয়ারী ও সমাজ কর্মী আনোয়ার হোসেন পাটওয়ারীসহ অনেকেই কিশোর শাওনের প্রশংসা করেছেন। 

বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করে তারা বলতে থাকেন- এমন ভদ্র ছেলে এই গ্রামে আর খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। হারুনুর রশিদ পাটওয়ারী জানান, শাওনের বাবাও কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত নন। সাদাসিদে মানুষ আবুল বাশার ও তার পরিবার। 

আবুল বাশারের বড় ছেলে পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। আরেক ছেলে মানসিক রোগী। নিয়মিত ওষুধ না খাওয়ালে তার রোগ বেড়ে যায়। একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। পরিবারের সহায় সম্বল বলতে এক চিলতে বসত ভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। গ্রামের রাস্তায় সবজি লাগিয়ে ও অন্যের জমি বর্গা চাষ করে কোনোমতে চলেন বাশার। পরিবারে শাওনই ছিল একমাত্র আয়ের উৎস। 

অভাব অনটনের কারণে শাওনের লেখাপড়া করা সম্ভব হয়নি। গ্রামের মাদ্রাসা থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। এরপর ফুফাতো বোনের জামাইয়ের সাথে চলে যান ঢাকায়। শনিরআখড়া এলাকায় সেই বোনজামাই শাহজাহানের কসমেটিকসের দোকানে সেলসম্যানের চাকরি করতেন শাওন। 

নিজ বাসায় থাকা খাওয়া দিয়ে শাহজাহান শাওনকে মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন দিতেন। সংসারে অভাব অনটনের কারণে সেই টাকা থেকে কখনো চার হাজার, আবার কখনো পুরো টাকাটাই পাঠিয়ে দিতেন বাবার কাছে। এভাবেই চলছিল।

২০ জুলাই (শনিবার) দুপুরে প্রতিদিনের মত শাওন দোকান বন্ধকরে খাবার খেতে বাসায় ফিরছিলেন। দোকানের বাইরে আসার পরপরই হেলিকপ্টার থেকে পুলিশের ছোড়া দুটি গুলি শাওনের বুকেও পেটে বিদ্ধ হয়। বুকের গুলিটি শরীর ভেদ করে বেরিয়ে যায়। 

শাওন লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। পরে গুলি বর্ষণ বন্ধ হলে আশপাশে থাকা লোকজন শাওনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

হাসপাতালে নেওয়ার সময় শাওন তার পকেটে থাকা মোবাইলটি দেখিয়ে দিয়ে উদ্ধারকারী একজনকে বলেন, ‘আব্বু নামে আমার বাবার মোবাইল নাম্বারটি সেভ করা আছে। আমার খবরটি আমার বাবাকে জানিয়ে দিন।’ শাওনের কথামত তিনি আবুল বাশারকে তার ছেলে গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর জানান। 

ছেলের মোবাইল থেকে ফোন পেয়ে আবুল বাশারের মনে আনন্দ দেখা দিলেও খবরটি পেয়ে যেন আকাশ ভেঙে পড়ে মাথায়। চিৎকার দিয়ে লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। আশপাশে থাকা লোকজন শাওনের মোবাইলে ফোন করে জানতে পারেন, শাওন মারা গেছেন। 

বাড়ির সামনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে শাওনকে। ছেলের কবর দেখাতে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবুল বাশার। ঘরে গিয়ে দেখা যায় নামাজের বিছানায় বসে ছেলের জন্য দোয়া করছেন মা কুলছুম বেগম। 

ছেলে নিহত হওয়ার পর থেকেই নির্বাক হয়ে গেছেন কুলছুম বেগম। কারও সাথে তেমন কথা বার্তা বলছেন না তিনি। বেশিরভাগ সময় তিনি ছেলের জন্য দোয়া কালাম পড়ে সময় পার করছেন। আবার কখনো কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন হতভাগী মা। 

২০ জুলাই দুপুরে শাওনের মৃত্যু হলেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শাওনের ময়না তদন্ত করে লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় পরদিন ২১ জুলাই (রোববার) রাতে। ২২ জুলাই (সোমবার) সকাল ১০টায় নিজ বাড়িতে গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। 

সাবেক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হারুনুর রশিদ পাটওয়ারী, আনোয়ার হোসেন পাটওয়ারী, সহিদুল ইসলামসহ গ্রামবাসীর দাবি শাওনের খুনির যেন বিচার হয়। পাশাপাশি এই পরিবারটিকে যেন সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়।

দেশসংবাদ/এএসএম


আপনার মতামত দিন
মধ্যরাতে কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত
কক্সবাজার প্রতিনিধি
Monday, 21 October, 2024
মিয়ানমারে বিস্ফোরণ, কাঁপছে টেকনাফ
কক্সবাজার প্রতিনিধি
Tuesday, 15 October, 2024
রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঠেকাল বিজিবি
কক্সবাজার প্রতিনিধি
Sunday, 13 October, 2024
ভারতে পালাতে গিয়ে সাবেক যুগ্ম সচিব গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
Saturday, 12 October, 2024
চৌদ্দগ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে ডাকাতিয়া নদীর কুচুরিপানা পরিস্কার
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
Saturday, 12 October, 2024
আরো খবর
সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর >>
https://deshsangbad.com/ad/1699508455_1491666999_th.jpg
সর্বাধিক পঠিত
ফেসবুকে আমরা
সম্পাদক
এফ. হোসাইন
উপদেষ্টা সম্পাদক
ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা
ঠিকানা
৮০২ ভিআইপি রোড, কাকরাইল
ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
Developed & Maintenance by i2soft
যোগাযোগ
ফোন: +৮৮ ০২ ৪৮৩১১১০১-২
মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৩ ৬০১৭২৯
ইমেইল: [email protected]
up