বর্তমানে বিশ্বের ২১০টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক লেনদেন রয়েছে। এর মধ্যে ৮২টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
রোববার (২৩ জুন) সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
এসময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। এ দিনের প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব এই নীতি অনুসরণ করে বিশ্বের প্রায় সকল দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বিদ্যমান রেখেছে। বর্তমানে বিশ্বের ২১০টি দেশের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক লেনদেন রয়েছে। দেশগুলোর মধ্যে ৮২টি দেশের বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট ১৫ হাজার ২৩৯ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে চীনের সঙ্গে। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১৭ হাজার ১৪৯ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থ বছরের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট বাণিজ্য ঘাটতি ১৫ হাজার ২৩৯ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বলেও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান।
এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা এবং বৈদেশিক বাণিজ্য ভারসাম্য রক্ষার্থে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার পাশাপাশি বৈদেশিক বাণিজ্য ও লেনদেন ভারসাম্য রক্ষা এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবুল কালামের প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ ব্যতীত আফগানিস্তান, ভুটান ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। আফগানিস্তানের সঙ্গে এক দশমিক ৪৯ মিলিয়ন ডলার, ভুটানের সঙ্গে ১৪ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন ডলার, ভারতের সঙ্গে সাত হাজার ১৬০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার, পাকিস্তানের সঙ্গে ৬১৪ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার ঘাটতি রয়েছে। অপরদিকে নেপালের সঙ্গে ৪১ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন ডলার, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ৯.০৭ মার্কিন ডলার, মালদ্বীপের সঙ্গে শূন্য দশমিক ১৪ মিলিয়ন ডলার উদ্ধৃত রয়েছে।
সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ২০১১-১২ অর্থ বছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৭০ দশমিক ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এই ঘাটতি বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৩৬২ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়।
একই সময়ে সার্কভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে আমদানি ৫ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ১০৩ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
সংরক্ষিত আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের প্রশ্নের উত্তরে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি সাত হাজার ১৬০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে তামাক ও মদ জাতীয় পণ্য ছাড়া সকল পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি লাঘব হচ্ছে এবং ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রফতানির পরিমাণ প্রথমবারের মতো দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।