ক্রিকেট দলের অর্জন যা-ই আছে, আম্পায়ারিংয়ে বাংলাদেশের নামটা তিনি ক্রিকেটবিশ্বে পরিচিত করিয়ে চলেছেন অনেকদিন ধরেই। এই তো, গত নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি, সেখানেও এক ইতিহাস গড়েছিলেন – তার আগে যে বাংলাদেশের আর কোনো আম্পায়ার কোনো বিশ্বকাপে সুযোগ পাননি!
শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত আরেকবার বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করলেন। আজ আইসিসি বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির আম্পায়ারদের এলিট প্যানেলে সুযোগ পেয়েছেন ৪৭ বছর বয়সী শরফুদ্দৌলা।
আইসিসি বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের বার্ষিক রিভিউ ও নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষে আইসিসির আম্পায়ারদের ‘ইন্টারন্যাশনাল প্যানেল’ থেকে শরফুদ্দৌলাকে ‘এলিট প্যানেলে’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে আইসিসির ইন্টারন্যাশনাল প্যানেলের আম্পায়ার ছিলেন শরফুদ্দৌলা, প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা ২০১০ সালে মিরপুরে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ম্যাচ দিয়ে।
তবে এরপর থেকে ক্রমেই উন্নতি করতে থাকা শরফুদ্দৌলা প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গত বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপে তো দায়িত্ব পালন করেছেনই, এরপর ব্রিসবেনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টেও আম্পায়ারিং করেছেন। বাংলাদেশের আম্পায়ারদের মধ্যে এর আগে কোনো টেস্টে নিরপেক্ষ আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা ছিল শুধু এনামুল হকের।
সব মিলিয়ে ছেলেদের ক্রিকেটে শরফুদ্দৌলার আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা – ১০ টেস্ট, ৬৩ ওয়ানডে আর ৪৪ টি-টোয়েন্টির। এর বাইরে মেয়েদের ক্রিকেটে ১৩টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ও ২৮টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও আম্পায়ারিং করেছেন তিনি। ছেলেদের বিশ্বকাপে গত নভেম্বরেই প্রথম সুযোগ পেলেও মেয়েদের বিশ্বকাপে আগেই আম্পায়ারিং করেছেন তিনি – ২০১৭ ও ২০২২ ওয়ানডে বিশ্বকাপ আর ২০১৮ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
এলিট প্যানেলে সুযোগ পাওয়ার তৃপ্তিটা ফুটে উঠেছে শরফুদ্দৌলার কণ্ঠে, ‘আইসিসির এলিট প্যানেলে নাম লেখাতে পারা অসাধারণ সম্মানের। আমি যে এ প্যানেলে আমার দেশের প্রথম আম্পায়ার – এই ব্যাপারটা অর্জনটাকে আরও বিশেষ করে তুলছে। আমার ওপর যে ভরসা রেখেছে (আইসিসি), সেটাকে যৌক্তিক প্রমাণ করতে উন্মুখ হয়ে আছি। অনেক বছরে অভিজ্ঞতা তো বেড়েছেই, এখন আরও চ্যালেঞ্জিং অ্যাসাইনমেন্টের জন্য আমি তৈরি।’
এলিট প্যানেলের আম্পায়ারদের তালিকায় শরফুদ্দৌলার অন্তর্ভুক্তির দিনে আইসিসির এলিট প্যানেলের ম্যাচ রেফারির সংখ্যা অবশ্য কমেছে – সাত থেকে কমে হয়েছে ছয়। ক্রিস ব্রডকে এবার আর এলিট প্যানেলে রাখেনি আইসিসি।