চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা পৌঁছেছেন বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধুপ্রতীম দেশ ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগুয়েল ওয়াংচুক, সঙ্গে রয়েছেন রানি জেৎসুন পেমা।
সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে ড্রুক এয়ার বা রয়েল ভুটান এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। রাজাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এসময় রাজাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
গত জানুয়ারির নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর কোনো রাষ্ট্র প্রধানের এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও ভুটানের রাজার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন মন্ত্রীসভার সদস্য ও সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভুটানের রাজা ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন। সেখানে গিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন। সেখানে রাখা পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করার রীতি রয়েছে অতিথিদের।
এদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ভুটানের রাজা। দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, তারা স্বাস্থ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পর্যটন, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি সমন্বয়, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ট্রানজিট, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি, ভারতকে সঙ্গে নিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিনিময়ে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা, স্বল্পোন্নত হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে উদ্ভূত চ্যালঞ্জেসমূহ মোকাবিলায় সহযোগিতা আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এ সময় ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি পুনঃনবায়নের কথা রয়েছে।
সফরের দ্বিতীয় দিন ভুটানের রাজা ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন, এরপর তিনি শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউিট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন। বিকেলে তিনি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
বাংলাদেশ সফরকালে পদ্মা সেতু দেখতে যাবেন ভুটানের রাজা। এ প্রসঙ্গে ড. হাছান জানান, ২৭ মার্চ ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু এবং নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবেন।
পরদিন অর্থাৎ সফরের শেষ ২৮ মার্চ দিন ভুটানের রাজা কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন। ওইদিন বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে রাজা বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী রাজাকে বিদায় জানাবেন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গার্ড অব অনার প্রদান করবে।