দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জের তিনটি সংসদীয় আসনে মোট ৩৩ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ছিল তিন জন। যাচাই-বাছাইয়ের সময় দুইজনের ঋণ খেলাপি ও একজনের গ্যাস বিল খেলাপি থাকায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় মিলনায়তনে মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার তাদের প্রার্থিতা বাতিল করেন।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করার সময় ১-৪ ডিসেম্বর। তবে আজকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মিলনাতয়নে মানিকগঞ্জের তিনটি আসনের ৩৩ জন প্রার্থীর দাখিল করা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এ সময় জেলার তিনটি আসনে ২১ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ১২ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা রেহেনা বেগম। তবে ঋণখেলাপি ও গ্যাস বিল খেলাপি থাকায় জেলার তিনটি আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা রেহেনা আকতার বলেন, জেলার তিনটি আসনে দাখিল করা ৩৩ মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে ২১ জনের প্রার্থিতা বৈধ এবং ১২ জনের বাতিল ঘোষণা করা হয়। মনোনয়নপত্রে ত্রুটি ও ঋণখেলাপি থাকায় তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। তবে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আগামী ৫-৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপিলের সুযোগ রয়েছে।
ঋণ খেলাপীর দায়ে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার এস এম আব্দুল মান্নান এবং মানিকগঞ্জ-১ ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনের জহিরুল আলম রুবেলের। অন্যদিকে, মানিকগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাসান সাঈদের মনোনয়ন বাড়ির গ্যাস বিল বকেয়া থাকায় বাতিল হয়েছে। মানিকগঞ্জ-১ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো: আফজালের মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়েছে। ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলা নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ-১ আসনে ১০ জনের মধ্যে ছয়জনের বাতিল হয়েছে।
মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল আলী বেপারী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী জহিরুল আলম রুবেল ও হাসান সাঈদ, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো: আফজাল, গণফ্রন্টের মোহাম্মদ শাহজাহান খান ও বিএনএম'র মোনায়েম খান। সিংগাইর, হরিরামপুর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ-২ আসনে ১৪জনের মধ্যে ১০জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। বাতিল হয়েছে চারজনেরটা।
এই আসনে বৈধ প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, টানা তিনবারের সংসদ সদস্য, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, স্বতন্ত্র প্রার্থী-আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল, সিংগাইর উপজেলা পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা মুশফিকুর রহমান খাঁন হান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের অ্যাডভোকেট ফেরদৌস আহমেদ আসিফ, জাসদের রফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী, বিএনএম'র এ কে এম ইকবাল, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির এ কে নাহিদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের তানভীন রহমান ও বাংলাদেশ কংগ্রেস'র প্রার্থী জাকির হোসেন।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আব্দুল মান্নান, প্রজন্মলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সারোয়ার আলম বাবু, স্বতন্ত্র প্রার্থী- স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী জসিম উদ্দিন।
মানিকগঞ্জ পৌরসভা, সাটুরিয়া উপজেলা ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ৭ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ-৩ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন ৯জন। এরমধ্যে বাতিল হয়েছে দুইজনেরটা। আর বৈধ হয়েছে ৭ জনেরটা।
এই আসনে বৈধ প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, টানা তিনবারের সংসদ সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, গণফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, এই আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম খান কামাল, জাকের পার্টির দ্বীন মোহাম্মদ খান, জাসদের সৈয়দ সারোয়ার আলম চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপি'র প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ, কৃষক-শ্রমিক- জনতা লীগের প্রার্থী এম হাবিব উল্লাহ, বিএনএম'র প্রার্থী খালেক দেওয়ান।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা জহিরুল আলম রুবেল ও বাংলাদেশ কংগ্রেস'র প্রার্থী সাবিনা বেগম।