Desh Sangbad
Desh Sangbad
শিরোনাম: ■ টিউলিপকে বরখাস্তে প্রবল চাপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ■ এনসিটিবির সামনে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত অনেকেই ■ ‘বিচারের পর দল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ আছে’ ■ অস্ত্র মামলায় রিমান্ডে ছাগলকাণ্ডের মতিউর ■ যুক্তরাষ্ট্রে সরকার পরিবর্তনে সম্পর্ক হোঁচট খাবে না ■ দুদক সংস্কারে ৪৭ সুপারিশ ■ অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ সবাই খালাস
জেনেভায় সরব হচ্ছেন মানবাধিকার কর্মীরা, জবাব দেবে সরকার
Published : Sunday, 12 November, 2023 at 10:23 AM, Update: 12.11.2023 11:34:52 AM

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কাউন্সিলের এক সভায় সোমবার (১৩ নভেম্বর) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। এনিয়ে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আসবে।

এর আগে ২০০৯, ২০১৩ এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালে বাংলাদেশের যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফার পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এ বৈঠকে বাংলাদেশ ছাড়াও বাংলাদেশসহ মোট ১৪টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আসবে।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে বিরোধী নেতা-কর্মীদের ঢালাও গ্রেফতার, পোশাক কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলন ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তি প্রয়োগের মতো বিষয়গুলো এবারের পর্যালোচনায় উঠে আসবে।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। ইউপিআর ওয়ার্কি গ্রুপের সভায় দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলোও অংশ নেয়।


ইউপিআর কী এবং কেন হয়?

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের একটি প্রস্তাব অনুসারে ২০০৬ সালে যখন মানবাধিকার কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন থেকেই ইউনিভার্সেল পিরিওডিক রিভিউ বা ইউপিআর শুরু হয়। এর মাধ্যমে জাতিসংঘের সদস্য ১৯৩ রাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয় প্রতি পাঁচ বছর পর।

ইউপিআর প্রতি বছর তিনবার ওয়ার্কি গ্রুপের বৈঠকে বসে। বিশ্বের ৪৭টি দেশের সমন্বয়ে এই ওয়ার্কি গ্রুপ গঠিত।

প্রতিটি ওয়ার্ক গ্রুপের সেশনে ১৬টি দেশের মানবাধিকার পর্যালোচনা করা হয়। অর্থাৎ প্রতিবছর ৪৮টি দেশের মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা হয়।

মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নতির জন্য সদস্য দেশগুলো কী ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং তাদের নিয়ে সমালোচনা কোথায় আছে সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলাপ হয় ইউপিআর ওয়ার্কি গ্রুপে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, তিন ধরণের নথিপত্রের ভিত্তিতে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।

প্রথমত; একটি জাতীয় প্রতিবেদন। এটি পেশ করে সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিনিধি। যেখানে সে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়। গত বৈঠকের পর থেকে কোন বিষয়গুলোতে কী ধরণের পরিবর্তন এসছে সেটি তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারি প্রতিনিধি।

দ্বিতীয়ত; জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে সন্নিবেশিত তথ্য

তৃতীয়ত; বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের দেয়া প্রতিবেদন

এসব প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে যে কোন সদস্য রাষ্ট্র চাইলে সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিনিধির কাছে প্রশ্ন. মন্তব্য কিংবা সুপারিশ রাখতে পারবে। প্রতিটি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় বরাদ্দ থাকে।
আদিলুর রহমান খান


মানবাধিকার সংস্থাগুলো কী বলছে?

এই সভায় প্রতিবছর যোগ দেয় নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

সংস্থাটির এশিয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বিবিসি বাংলাকে বলেন, পৃথিবীর ১৩৩টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কাজ করে। এর মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। প্রতিটি দেশের মানবাধিকার সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

যেসব প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে এই পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হবে সেসব প্রতিবেদন এই মধ্যে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের কাছে জমা দেয়া হয়েছে।

বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে সেসব প্রতিবেদনে। তার প্রতিবেদনগুলো ইতোমধ্যে মানবাধিকার কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে।

সেখানে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক ১৪টি মানবাধিকার সংস্থা যৌথভাবে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে।

সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহার করছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে – জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিচার বিভাগ।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেনা।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চেয়েছিল পুলিশের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আসে সেগুলো যাতে তারা স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারে।

এজন্য ২০২১ সালের মার্চ মাসে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেটি এখনো কার্যকর হয়নি।

বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের উপর মাত্রাতিরিক্ত ও অবৈধ শক্তি প্রয়োগের বিষয়গুলো তদন্ত করা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব কর্মকর্তা এর সাথে জড়িত তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার সুপারিশ করছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।


বাংলাদেশ সরকার কী বলছে?

এই পর্যালোচনা বৈঠকের জন্য বাংলাদেশ সরকারও একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের কাছে।

সর্বশেষ পর্যালোচনার পর থেকে গত পাঁচ বছরে মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশে কী অগ্রগতি হয়েছে সেটির বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

সরকারের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালের প্রণীত দুর্নীতি দমন কমিশন আইন সংশোধন করা হয়েছে।

এর ফলে দুদক তাদের জেলা পর্যায়ের অফিসের মাধ্যমে নিজেই দুর্নীতির মামলা দায়ের করতে পারে। এখন থানায় মামলা করতে হয়না। এতে দুর্নীতি দমন কমিশন বেশি স্বাধীনতা লাভ করেছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

বাংলাদেশ সরকার দাবি করেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানবাধিকারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়। কোন সদস্য আইন ভঙ্গ করে শক্তি প্রয়োগ করলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১৭০০ সদস্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এসময়ের মধ্যে সাড়ে আট হাজার পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বড় ধরণের বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সরকারের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের কিছু অপব্যবহার লক্ষ্য করেছে সরকার।

সেজন্য এর কিছু ধারা সংশোধন করে নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া সাংবাদিকরা যাতে কোন ধরণের হয়রানি ছাড়া এবং ভয়ভীতি মুক্ত পরিবেশে কাজ করতে পারে সেটি নিশ্চিত করার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


এই পর্যালোচনার ফলাফল কী?

ওয়ার্কিং গ্রুপের আলোচনা ও পর্যালোচনার পরে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হবে। এ রিপোর্ট তৈরির সাথে সংশ্লিষ্ট দেশ ও জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সম্পৃক্ততা থাকে।

এই রিপোর্টে পুরো আলোচনার একটি সারমর্ম লিপিবদ্ধ করা হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রে উত্থাপিত প্রশ্ন, মন্তব্য এবং সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

এসব প্রশ্ন ও মন্তব্যের জবাবে সংশ্লিষ্ট দেশ সেসব উত্তর দিয়েছে সেটিও তুলে ধরা হবে।

মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ইউপিএ ওয়ার্কিং গ্রুপে যেসব সুপারিশ ও পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়, সেটি আইনগতভাবে মানতে বাধ্য নয় কোন দেশ।

তবে এ পর্যালোচনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব বিষয় উঠে আসবে সেগুলো বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার পদক্ষেপকে প্রভাবিত করতে পারে।

দেশসংবাদ/এমএইচ/এইচএন


আপনার মতামত দিন
লেবাননে দুই মাসে নিহত দুই শতাধিক শিশু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Tuesday, 19 November, 2024
শান্তিতে নোবেল জিতলো জাপানি সংস্থা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Friday, 11 October, 2024
বৈশিক ক্ষুধা সূচকে ৩ ধাপ পেছাল বাংলাদেশ
এম. মোশাররফ হোসাইন
Friday, 11 October, 2024
আরো খবর
সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর >>
https://deshsangbad.com/ad/1699508455_1491666999_th.jpg
সর্বাধিক পঠিত
ফেসবুকে আমরা
সম্পাদক
এফ. হোসাইন
উপদেষ্টা সম্পাদক
ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা
ঠিকানা
৮০২ ভিআইপি রোড, কাকরাইল
ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
Developed & Maintenance by i2soft
যোগাযোগ
ফোন: +৮৮ ০২ ৪৮৩১১১০১-২
মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৩ ৬০১৭২৯
ইমেইল: [email protected]
up