শিরোনাম: |
দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে মেঘনা ঘাট-মদুনাঘাট ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন প্রকল্পের কাজ। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ হচ্ছে বলে জানা গেছে জনস্বার্থে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক অন্যতম এই প্রকল্পের নির্মান কাজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি মেঘনা ঘাট-মদুনাঘাট ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সরকার ও জাইকার যৌথ অর্থায়নে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) লিমিটেডের অধীনে টার্নকী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেইসি ইন্টারন্যাশনাল লিঃ (ভারত) মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বিদ্যুতের সুষম সঞ্চালনের লক্ষ্যে ৬ জেলার ১৭ উপজেলায় বসানো হচ্ছে ৬৫০টি টাওয়ার। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭০০ কোটি টাকা। প্রকল্পের প্রাক্কলিত সময় ৩৪ মাস।
মাঠপর্যায়ে সার্বক্ষনিক তদারককারী উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল হাসেম জানান, ইতোমধ্যে প্রকল্পের কাজ প্রায় ৪৮ ভাগ শেষ হয়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি জানান।
কেইসি ইন্টারন্যাশনালের প্রজেক্ট ম্যানেজার কুলদীপ কুমার সিনহা বলেন, এ ধরনের লাইন নির্মাণকাজে অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিকূল পরিবেশ (নদী, বন এবং পাহাড়) বিপর্যস্ত রাস্তাঘাট, কর্দমাক্ত খালসহ বিবিধ কারনে বছরের নির্দিষ্ট সময় কাজ করা সম্ভব নয়। এরপরও আমাদের প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা, পর্যাপ্ত লোকবল, বিপুল পরিমাণ যান্ত্রিক অবকাঠামো থাকার কারণে প্রকল্পটি প্রাক্কলিত সময়ে ৩৪ মাসে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি।
প্রকল্পে কর্মরত দেশী-বিদেশী প্রকৌশলীগণ বলেন, সঞ্চালন লাইন দিয়ে ভবিষ্যতে যাতে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ সঞ্চালিত হতে পারে সেজন্য উচ্চতর প্রযুক্তির তার ও কন্ডাক্টর বসানো হবে। পিজিসিবির গৃহীত ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মেইন পাওয়ার গ্রিড স্ট্রেংথদেনিং প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আর ও দুটি ৪০০ কেভি সাবস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে।
গত ২৭ আগস্ট গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সারাদেশে ১৮ জেলার ৩১ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিতকরণে দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, ১১টি গ্রিড সাব-স্টেশন, ছয়টি নতুন ট্রান্সমিশন লাইন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে যাতে দেশের মানুষ তাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা অর্জন করতে পারে। বর্তমানে দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষ ২৩ হাজার ৫৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুতের আওতায় রয়েছে এবং সরকার ২০২১ সালের মধ্যে এই অবস্থা শতভাগে বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছি।
জানা যায়, জনস্বার্থে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প কাজ মনিটরিং-এ সংশ্লিষ্টরা নিয়োজিত রয়েছেন। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণে ঋতুভিত্তিক সহনীয় ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ সঞ্চালন নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। প্রকল্পের মালামালসহ নির্মাণ কাজের গুনগত মান তদারকির জন্য কারিগরী পরামর্শক, প্রকৌশলী এবং বাস্তবায়ন কাজ পরিচালনার জন্য জাইকা কর্তৃক মনোনীত জেভি অফ টোকিও ইলেক্ট্রিক পাওয়ার সার্ভিসেস কো: (টেপসকো) এবং নিপ্পন কোয়ে কোম্পানি লিমিটেড তত্ত্বাবধান করছেন।
কক্সবাজার জেলার মাতারবাড়ী অঞ্চলে কয়লা ভিত্তিক ১২০০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালীতে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মীরেরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৩২০ মেগাওয়াট সহ সর্বমোট ৩৮৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ এখন চলমান রয়েছে। দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে ও বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ এবং অর্থায়নে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানী অব বাংলাদেশ লিমিটেড এই বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মান করছে।
দেশসংবাদ/ডিএ/এফএইচ/mmh
আপনার মতামত দিন
|