রিনাদের বাড়িটা দোতলা।বাসার ছাদ একপাশ রেলিং দেয়া, আরেক পাশ ফাকা।রিনা প্রতিদিন বেলা ৩ টা করে ছাদে আসে। গুণ গুনিয়ে গান গাইতে থাকে, এদিক ওদিক ছোটে, মাঝে মাঝে হাত পা বিশেষ কায়দা করে নৃত্য ভঙ্গি করে।ছাদটা প্রায় ২০০০ স্কয়ার ফিট।
আজ বেলা পেরিয়ে গেলো, রিনা ছাদে উঠলো না। সাদি জানালা থেকে উঁকি মেরে তাকে খুঁজছে। যেভাবে সমুদ্রে এসে আনন্দ খুঁজে বেড়াই পিপাসু দর্শনার্থী। সাদি তাকে খোঁজে। যেন আনন্দের সন্ধানে।
সাদি বাড়ি থেকে তেমন বেরোয় না।বিকেলে খেলতে যাওয়া নিষেধ। তার বাবা মা ভাবে খেলতে গেলে পড়ালেখার মন গচ্ছা যাবে। আর গতবার যে মারামারিটা বাঁধাল সেই থেকে একদম নিষিদ্ধ। বিকেলে তার সময় কাটে রিনার বাধহীন স্বাধীন চলাফেরা দেখে।
রিনাকে দেখে তার এক মুহূর্ত মনে হয়, একদিন সে বিশ্বজয় করবে। ইশ,একদিন যদি তাকে রিনা এমন বাধাহীন স্বাধীন বাহুর ছুড়াছুঁড়িতে শামিল করতো, এই ভেবে ভেবে অপেক্ষায় বসে আছে সাদি। রিনা আসছে না, অস্থির হয়ে পড়ল সাদি।
তার ইচ্ছে হল রিনার বাড়িতে গিয়ে সরাসরি জিজ্ঞেস করতে, রিনা আজ উপরে (ছাদে) উঠছে না কেন?
সন্ধ্যা পেড়িয়ে গেলো। রাত এলো। ভোর হলো।
রিনা আজ ও ছাদে উঠলো না। সাদি উতলা হয়ে অস্থিরতায় ছটফট করতে লাগলো। উঠোনে একটি এম্বুলেন্স দাড়ানো, দৌড়ে নিচে নামলো সাদি। রক্তাক্ত রিনা, তাকে গাড়িতে তোলা হচ্ছে।
ওদিকে পুলিশের গাড়িতে টেনে ধরে নেয়া হচ্ছে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীকে। দূর থেকে থেমে থেমে, ভেসে ভেসে প্রতিবাদের আওয়াজ আসছে । ধর্ষকের ফাসি চাই। ধর্ষকের ফাসি চাই। দিগন্তে লোহিত আলো অন্ধকার কালোয় মিশে গেছে ধীরে ধীরে।