শিরোনাম: |
সরকার দূর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে যেখানে প্রতিনিয়ত কঠোর থেকে কঠোরতর পদক্ষেপ গ্রহন করে শাহেদ, পাপিয়া, সম্রাট, সাবরিনা কাউকে না ছাড় দিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে চলছেন, সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের কিছু অসাধু দালালদের যোগসাজশে সুস্থ ব্যক্তি পাচ্ছেন প্রতিবন্ধী ভাতা ও স্বামী থাকা সত্বেও পাচ্ছেন বিধবা ভাতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের মুক্তারামপুর গ্রামের বেশ কয়টি প্রতিবন্ধী ভাতা ও বিধবা ভাতার ক্ষেত্রে এমনটা ঘটছে, একটি দালাল চক্র এই সব ভাতা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে জনপ্রতি হাতিয়ে নিচ্ছে।
মাঠ পর্যায়ে তথ্য নিয়ে জানা যায়, বড়িকান্দি ইউনিয়নের ০২ নং ওর্য়াডের মুক্তারামপুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আস্কর আলী নামক ব্যক্তি নিজেকে নবীনগর সমাজসেবা অধিদপ্তরের সাথে ভাল সম্পর্ক আছে বলে প্রচার করে প্রতারণা করে গ্রামের হতদরিদ্র অসহায় মানুষদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে এই টাকা। এই ধরনের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে বহুবার উঠেছে কিন্তু বরাবরই সে পার পেয়ে যাওয়ায় এই বার ২৬ জনকে প্রতিবন্ধী ও বিধবা ভাতা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা।
আজ অগ্রণী ব্যাংক শাখায় ভাতার কার্ড নিতে আসা তালিকা বহির্ভূত ফাতেমা বেগম স্বামী ওহিদ মিয়া, সেলিনা বেগম স্বামী আনু মিয়া, নূরজাহান বেগম স্বামী কিতাব আলী, অবিদ মিয়া পিতা মৃত জীবন মিয়া, জোছনা বেগম স্বামী আহসান মিয়া,মালেকা বেগম পিতা সিতাব আলী, সিপন বেগম পিতা মৃত সুন্দর আলী, হালিমা বেগম পিতা সুন্দ মিয়া সহ আরো বেশ কয়েকজনকে দেখে সন্দেহ হলে স্থানীয় সাংবাদিক মোঃ আক্তারুজ্জামান ও ইউপি সদস্যের তোপের মুখে পরে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাঠ কর্মী মোঃ পাবেল।
এবিষয়ে বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ০২ নং ওর্য়াড সদস্য মোঃ জালাল উদ্দীন বলেন, আমি শুধু আমার ওর্য়াড থেকে ১১ জনের ভাতার কার্ড পাওয়ার সুযোগ পেয়েছি, আমাকে অবগত না করে বাকীরা কি করে তালিকায় নাম উঠিয়েছে এই বিষয়ে আমি নিজেও জানি না। তাছাড়া আমাকে বাদ দিয়ে যদি যে কেউ তাদের নাম ভাতার তালিকায় উঠাতে পারে তবে যাচাই বাচাইয়ের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের কি দরকার, আমি তার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথের কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করি।
তালিকায় কি করে এদের নাম আসল এই প্রশ্নের উত্তরে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাঠ কর্মী মোঃ পাবেল বলেন, আমি শুনেছি ৯ জনের নামে অভিযোগ উঠেছে যে, তারা ভাতা পাওয়ার যোগ্য না এই ৯ জনের কাউকে ভাতা দেয়া হবে না যতক্ষণ না তারা মাঠ পর্যায়ে যাচাই বাচাইয়ে টিকবে। কিন্তু কি করে তাদের নাম তালিকায় আসল এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায় বিধবা ভাতার তালিকায় নাম থাকা জোসনা বেগম ইতিমধ্যে সরকারের দেয়া ঘরও পেয়েছেন তার স্বামী একজন ইলেকট্রেশিয়ান।
এই সম্পর্কে জোসনা বেগম বলেন, আমি বিধবা ভাতায় নাম দিয়েছি আমার স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করে আলাদা থাকে, কার মাধ্যমে নাম দিয়েছেন জানতে চাইলে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যায়।
আরেক প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়া সুস্থ মহিলা সেলিনা বেগম বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতায় আমার নাম এসেছে, কারে মাধ্যমে জমা দিয়েছেন প্রশ্ন করলে দালালের নাম বলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে বলেন, আমি নিজেও জানিনা আমার নাম কি করে তালিকায় আসছে, আমি ঢাকা থেকে এসে দেখি আমার নাম প্রতিবন্ধী ভাতা তালিকায় রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে দালাল চক্রের মূলহোতার নাম আসা আস্কর আলীকে তার মুঠোফোনে বার বার ফোন করে না পেয়ে তার বাড়িতে গেলে সেখানেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ পারভেজ আহমেদ বলেন,আমার কাছে ৯ জনের নামে একটি বেনামে অভিযোগ এসেছে যদিও অফিসিয়ালি অভিযোগকারীর নাম ছাড়া ব্যবস্থা নেয়া যায় না তারপরও বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব, আমি আপনাদের মাধ্যমে সাফ জানিয়ে দিতে চাই আমার কর্তব্যরত এলাকায় কোন ধরনের দালালকে প্রশ্রয় দেয়া হয় না তাছাড়া বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমাজসেবা অধিদপ্তরের সকল সেবা ফ্রী করে দিয়েছেন তাই কেউ যেন দালালের চক্করে না পরে আমি সবাইকে অনুরোধ করব।
তিনি আরো বলেন যদি আমার অফিসের কারো বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায় আমি তাৎক্ষণিক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
দেশসংবাদ/প্রতিনিধি/এফএইচ/mmh
আপনার মতামত দিন
|